নিউজ ডেস্ক, শাশ্বতী চক্রবর্তী, ৫ সেপ্টেম্বর : একজন সফল মানুষের পেছনে শিক্ষকের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা বলাই বাহুল্য। তবে সেই শিক্ষক যে কেবল পুঁথিগত ক্ষেত্রেই হতে হবে, তা কিন্তু নয়। জীবনে চলার পথে আমরা প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিখি। যে ব্যাক্তি জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন, শুধু সফল নয়, যে একজন ভাল মানুষ হতে শেখাবেন, সেও তো শিক্ষক।
তবে ছাত্রজীবন ও শিক্ষকতার জীবনে ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটি অনন্য। ৫ই সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শিক্ষক দিবস। দেশের অগণিত শিক্ষকদের আদর্শগত মহান কর্মকাণ্ডের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁদের পেশাগত অবদানকে স্মরণে-বরণে শ্রদ্ধায় পালন করার জন্য সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মহান শিক্ষক পালন করার রীতি রয়েছে।
শিক্ষক সম্পর্কে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, “যদি একটি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত এবং সুন্দর মনের মানুষের জাতি হতে হয়, তাহলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এ ক্ষেত্রে তিনজন সামাজিক সদস্য পার্থক্য এনে দিতে পারে। তারা হলেন বাবা, মা এবং শিক্ষক।”
এই দিনটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে পালিত হয়। যেমন বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ৫ই অক্টোবর “বিশ্ব শিক্ষক দিবস” হিসেবে পালন করা হয়। UNICEF থেকেও ৫ই অক্টোবর দিনটিকেই “বিশ্ব শিক্ষক দিবসের” স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
তবে আমাদের দেশে এই দিনটি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিনেই পালিত হয়।
দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন শুধুমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন, শিক্ষাবিদ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন একজন দক্ষ কূটনৈতিক জ্ঞানী পন্ডিত। যদিও এতসব পরিচয়ের পরেও অসম্পূর্ণ থেকে যায় তার পরিচয়। কারন এইসব পরিচয় বাদ দিলেও দিনের শেষে যে কারণে তাকে মনে রাখা যায় তা হল একজন শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ।
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ১৮৮৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
নিজের জন্মদিন নিয়ে বরাবরই উদাসীনতা ছিল ডঃ রাধাকৃষ্ণনের। তিনি ভারতের দ্বিতীয় রাস্ট্রপতির আসীন থাকাকালীন তাঁর জন্মদিন পালনের অনুরোধ নিয়ে তার কিছু ছাত্রছাত্রী তাঁর কাছে এসেছিলেন।
এই উপলক্ষে তিনি নিজেই সেই ছাত্রছাত্রীদের কাছে আর্জি জানালেন যে, “শুধু আমার জন্মদিন হিসেবে নয়, এই দিনটিকে যদি সকল শিক্ষকদের দিন হিসাবে পালন করো তাহলে আমি খুব খুশি হব এবং সেদিন থেকেই শিক্ষকদের মনে রেখে এই দিন উৎযাপন করা হয়।