নিউজ ডেস্ক , ঋজু রায়চৌধুরী : কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালী। সে চুনো পুঁটিই হোক, বা রাঘব বোয়াল; সাহেবি পাবদা বা আমজনতার চারা পোনা, বাঙালী মানেই মাছ, আর মাছ মানেই বাঙালী। একে অপরের যেন পরিপূরক। মাছ খাওয়া নিয়ে বাঙালীকে ‘খোঁটা’ও কম খেতে হয় না, তবু মাছপ্রীতি যেন বাঙালির রক্তে। তবে নিন্দুকেরা যাই বলুক না কেন, এই মাছপ্রীতির কিন্তু অনেক সুফল আছে। রোজ খাদ্যতালিকায় মাছ রাখার উপকারিতা কিন্তু অনেক। চলুন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক মাছ খাওয়ার কিছু গুণাবলী, যা নিয়ে আমরা অনেকেই ভাবি নি।
১) মানসিক অবসাদ দূর করতে
বর্তমান যুগে আমরা কাজের চাপে অনেকেই বিধ্বস্ত দিনের শেষে খাটাখাটনির পর নেমে আসে ক্লান্তি। তাছাড়া তাছাড়া নানান চিন্তা ভাবনা থেকে মানসিক চাপ ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছে।মাছে আছে ‘ওমেগা থ্রী ফ্যাটি অ্যাসিড ‘ যা শরীরে প্রবেশ করে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে মানসিক চাপ বা অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২) ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি পূরণ :
আমাদের শরীর সুস্থ সবল রাখতে অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি উপাদান হলো ভিটামিন-ডি। মাছে, বিশেষত ছোট মাছে ভরপুর থাকে ভিটামিন ডি, যা আমাদের শরীরকে সবল করতে সহায়তা করে।
৩) ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে ও হাঁড় মজবুত করে :
মানব শরীরে হাঁড় মজবুত না হলে অনেক শারিরীক সমস্যা দেখা দেয়। পুটি, কেচকি, মৌরলা সহ বিভিন্ন মাছ ক্যালসিয়াম এর চাহিদা মেটাতে উপযোগী। বিশেষজ্ঞ দের মতে, হাড় সহ এই ছোট মাছ গুলো খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম এর চাহিদা মেটে। বাড়ন্ত শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুব উপযোগী এই মাছ।
৪) হার্ট ভালো রাখতে :
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাত্রা ও খাদ্যাভাসের কারণে আজ বহু মানুষ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। বয়স ২৫ কী ৭৫, যে কোনো ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন হার্ট ভালো রাখতে খাদ্য তালিকায় রাখুন মাছ। অবশ্যই তা যেন তৈলাক্ত না হয়।
৫) স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি তে মাছ :
ছোট বেলায় আমরা অনেকেই কমবেশি শুনে বড় হয়েছি যে মাছের মাথা খেলে বুদ্ধি খোলে। মা-ঠাকুমাদের মুখের এই কথা কিন্ত একেবারে অযৌক্তিক নয়। বরং নিয়মিত মাছ খেলে শরীরে ডিএইচএ ফ্যাটি অ্যাসিড এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন : কেন গোটা বিশ্বের সাথে ভারতেও ৫ই অক্টোবর শিক্ষক দিবস পালিত হয় না ?
তাই যতই আঁশটে গন্ধ হোক, কিংবা কাঁটা বাছার ঝক্কি হোক না কেন, মাছ খেলে শরীরে তার উপকার ধরা পড়বেই। তাছাড়া চুল, চোখ ও ত্বক ভালো রাখতে মাছের জুড়ি মেলা ভার। আর সবচেয়ে বড় কথা কাঁটা বেছে মাছ খেতে প্রয়োজন যথেষ্ট ধৈর্যের। এ যেন এক শিল্প, যাতে প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষণের।
আরও পড়ুন : নাকে গন্ধ না পাওয়া মানেই করোনা নয়