নিউজ ডেস্ক: একেই হয়ত বলে ঈশ্বর প্রদত্ত উপহার। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই অন্তরের ডাকে সাড়া দিয়ে ভালোবেসে কাজ করলে সফলতা তো আসবেই। আর তার উদাহরন তৈরী করেছে রায়গঞ্জের অনির্বাণ। পুরো নাম অনির্বান সাহা। রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগরের দেবীতলার বাসিন্দা। অনির্বান দেবীনগর কৈলাশ চন্দ্র রাধারানী বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেনীর ছাত্র। ছোট থেকেই শিল্পের প্রতি তার টান৷ ছোটবেলায় কাদামাটি নিয়েই দিনভর খেলাধূলো করত সে। তখন অবশ্য বাবা মায়ের থেকে বকুনি জুটত। কিন্তু এসবের মাঝেও ছোট্ট এই শিশুটি কিছু সৃষ্টির চেষ্টা করত। একটু বড় হতেই পড়াশোনার পাশাপাশি অঙ্কন শিখতে শুরু করে অনির্বান। কিন্তু শুধু কাগজ পেন্সিল আর রং তুলিতে সীমাবদ্ধ না থেকে মাটির জিনিস গড়তে ভালোলাগত তার। আর সেই ভালোলাগা যে একদিন তাকে কিশোর শিল্পীর তকমা দেবে তা হয়ত ভাবতে পারেনি সে নিজেও। একটু একটু করে মাটির নানান ধরনের মূর্তি তৈরী করতে থাকে। কখনও দেবদেবীর মূর্তি কখনও মনের ভাবনা থেকে স্ট্যাচু তৈরী করছে অনির্বান। শুধু মাটি নয় সিমেন্টের মূর্তির তৈরী করে ফেলেছে সে। এছাড়াও মাটির পাত্র কিংবা পাথরের উপরে তার কারুকার্যও সকলের বেশ নজর কেড়েছে।
পুরীর রথযাত্রা এবছর দুদিন,কিন্তু কেন?
অনির্বান সাহা জানিয়েছে, এসব কাজ সে কোথাও শেখেনি। তার বয়স যখন চার থেকে পাঁচ বছর তখন থেকেই শুরু হয় কাজ। পড়াশুনার ফাঁকে এসব করতে তার খুব ভালো লাগে। তবে লকডাউনের সময় এই মূর্তি তৈরীর কাজে অনেকটা সময় দিতে পেরেছিল সে। সে সময় অনেক মূর্তি তৈরি করেছে। পড়াশোনার থেকে মূর্তি গড়তেই বেশি আগ্রহী অনির্বাণ। বড় হলে এসব নিয়েই এগোতে চায় সে। বাবা কিছুটা বকা দেয় বটে। তবে মায়ের সাপোর্ট রয়েছে যথেষ্ট।
আমরা কথা বলেছিলাম অনির্বাণের মা রুমা সাহার সাথে। ছেলের এমন সুন্দর কাজে তিনি যথেষ্ট খুশি। তিনি জানান, ছেলের কাজ দেখে খুব ভালো লাগে। ছোট থেকেই জল-কাদা নিয়ে খেলতে ভালবাসত অনির্বান। তারপর সেখান থেকেই একটু একটু করে মূর্তি গড়ার কাজ শুরু করে। ওর তৈরি প্রথম লক্ষ্মী প্রতিমা বাড়িতে পুজো করা হয়েছে। এরপর বহু প্রতিমাই তৈরি করেছে অনির্বাণ। এসব তৈরি করতে যা জিনিস লাগে তা রুমা দেবীই কিনে দেন তাকে। তার আশা এই শিল্পসত্ত্বার মধ্যে দিয়ে ছেলে একদিন অনেক বড় হবে।