ডিজিটাল ডেস্ক : কেবল পৃথিবী ছাড়া মহাবিশ্বের আর কোথাও প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে বছরের পর বছর গবেষণা চললেও কোনো সাফল্য মেলেনি। তবে তথ্য এসেছে যে গ্রহটি শুকতারা ও সন্ধ্যাতারা নামে পৃথিবীর আকাশে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে উদিত হয়, যার নাম পৃথিবীর মানুষ দিয়েছে গ্রিক পুরানের প্রেমের দেবী ভেনাসকে স্মরণ করে। শুক্র গ্রহের বিষাক্ত পরিবেশেই এবার প্রাণের লক্ষণ আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের এ গ্রহটির মেঘে ফসফিন গ্যাস দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা প্রাণের অস্তিত্বের বিষয়ে আশাবাদী করে তুলেছে। সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এমন সুস্পষ্ট প্রমাণ যদিও এখনও মেলেনি, তবে পৃথিবীতে ফসফিন গ্যাস উৎপাদনে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা থাকার কারণে শুক্র গ্রহেও তেমন কোনো অণুজীব থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। নেচার অ্যাস্ট্রনমিতে প্রকাশিত প্রবন্ধে বলা হচ্ছে , ‘এটা একেবারে অপ্রত্যাশিত, স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতও ঘটনা ।’
অন্যদিকে, নাসা জানাচ্ছে, ‘ভেনাসকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এসেছে।’
ফসফিন হল ফসফরাস ও হাইড্রোজেন মিলে গঠিত একটি রাসায়নিক যৌগ (Chemical compounds)। পৃথিবীতে কিছু ব্যাকটেরিয়া প্রাকৃতিকভাবে ফসফরাসের সঙ্গে হাইড্রোজেনের মিলন ঘটিয়ে এই গ্যাস তৈরি করে। কিছু গবেষক অবশ্য বলেছেন যে, কোনও গ্রহের অজানা বায়ূমন্ডলীয় বা ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার রহস্যজনক অবস্থা থেকে গ্যাসটি আসতে পারে। তবে পৃথিবীতে রসায়নাগারে কিংবা কারখানায় ফসফিন তৈরি করা সম্ভব হলেও শুক্রে তো কোনো কারখানা নেই। তাহলে শুক্রের ভূ-পৃষ্ঠের ৫০ কিলোমিটার উপরে মেঘরাশির মধ্যে এ ফসফিন কেমন করে এল ? এর জবাবে গবেষকেরা বলেছেন, শুক্রে না গিয়ে তা আমাদের জানা সম্ভব নয়। শুক্র গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে সূর্যের অনেক কাছে বলে এর তাপমাত্রা অনেক বেশি। সেই তাপমাত্রায় কোনো জীবের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দেখেন না বিজ্ঞানীরা। তবে শুক্রের পৃষ্ঠ ছাড়িয়ে অনেক উপরে যেখানে তাপমাত্রা পৃথিবীর মতো, সেখানেই ফসফিন গ্যাসের এ আবরণের পেছনে কোনো অণুজীবের অবদান উড়িয়ে দিয়ে পারছেন না তারা। শুক্রের বায়ূমন্ডলে বেঁচে থাকতে যেকোনও জীবাণুুর চরম সহ্য ক্ষমতা থাকতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘শুক্র এখন হয়ত বাসযোগ্য নয়, তবে অনেককাল আগে হয়ত এর পৃষ্ঠে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। হয়ত গ্রিনহাউস এফেক্ট এই গ্রহকে এখন বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। তদের বক্তব্য, ৭০০ মিলিয়ন বছর আগে শুক্রে সমুদ্র ছিল। তবে গ্রহটি শুকিয়ে যাওয়ার তা মেঘে পরিণত হয় এবং কেউ জানে না যে জীবাণুগুলি আমাদের মতো ডিএনএ দিয়ে তৈরি না কি সম্পূর্ণ অন্যকিছু।