নিউজ ডেস্ক , ৭ই নভেম্বর : বালুর অভাবে ছোট দালান বাড়ি থেকে ইমারত বা অট্টালিকা সব নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে থাকায় কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার নির্মান শ্রমিক থেকে শুরু বালি বহনকারী লড়ির চালক ও কর্মীরা। বালির জন্য কাজ বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় পরেছেন রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর জেলায় বহু মানুষ। অবিলম্বে বালির সমস্যা সমাধান করে বালির যোগান ও সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন নির্মান কাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রী থেকে নির্মান শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট মানুষজন।
দালানকোঠা বা যেকোনো বিল্ডিং নির্মানের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ বালি। বালি ছাড়া বিল্ডিং নির্মানের কাজ কোনওমতেই সম্ভব নয়। রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার সরকারি বেসরকারি সমস্ত বিল্ডিং নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় বালি আসে চোপড়া এবং শিলিগুড়ির বালাসন ঘাট থেকে। এর পাশাপাশি বিল্ডিং নির্মানের জন্য লাল বালু আসে বীরভূমের মুরারই থেকে। কিন্তু এসবই বালি সরকারকে রয়্যালটি না দিয়ে অবৈধভাবে লড়িতে করে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ে এনে বিক্রি করতেন লড়ি চালক ও মালিকেরা। ঘাট থেকে অবৈধভাবে এই বালি তোলা ও বিক্রি বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয় বালির নদীঘাট। ফলে রায়গঞ্জে শয়ে শয়ে বালি বোঝাই লড়ি আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর বালির অভাবে চরম সমস্যায় পরেছেন কয়েক হাজার নির্মান শ্রমিক থেকে শুরু বিল্ডিং নির্মানকারী ঠিকাদার ও গৃহস্থেরা। বালির সঙ্কটে প্রায় সব জায়গায় কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। রনজিৎ মন্ডল নামে এক রাজমিস্ত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বালির অভাবে নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে পরে রয়েছে। এরফলে নির্মান কাজের সাথে যুক্ত রাজমিস্ত্রী থেকে গরীব শ্রমিকেরা কাজ হারিয়ে না খেয়ে মরতে বসেছে। অবিলম্বে বালি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান তিনি।
হিমাংশু শীল নামে এক গৃহস্থ জানিয়েছেন বালির অভাবে চরম দুর্ভোগে পরেছেন তিনি। অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়ে তার বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে রড বাইন্ডিং করে রেখে দিয়েছেন। বালির অভাবে ছাদ ঢালাই করতে পারছেন না। বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ না হওয়ার কারনে তাঁর বসবাস করতে সমস্যা হচ্ছে। রমেশ মাহাতো নামে এক বালি ব্যাবসায়ী বলেন, বালি তোলা নিয়ে নদীঘাটগুলোতে ঝামেলা হওয়ার কারনে রায়গঞ্জে বালি বোঝাই লড়ি আসছেনা। আগে এই শিলিগুড়ি মোড় এলাকায় প্রতিদিন ৩৫/৪০ টা করে বালি বোঝাই লড়ির দেখা মিলত। বালির গাড়ি আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সকলেই। চুপেচাপে দুএকটি বালির লড়ি আসলেও তার দাম আকাশছোঁয়া। আগে যেখানে এক লড়ি বালি ১৪/১৫ হাজার টাকায় পাওয়া যেতো সেই বালি কিনতে হচ্ছে ২৮/৩০ হাজার টাকায়। তাও মিলছেনা বালি।
লড়ি করে বালু না আনতে পারায় সমস্যায় পরেছেন লড়ির চালক থেকে লড়ির মালিকেরা। জীবন রায় নামে এক লড়ির মালিক জানিয়েছেন, আমরা উপযুক্ত রয়্যালটি দিয়েই ঘাট থেকে বালি আনতে চাই। প্রশাসন রয়্যালটি চালু করেই বালি বিক্রির ব্যাবস্থা করুক। বালি না আনতে পারার জন্য তাঁরাও চরম সমস্যায় পরেছেন।বাড়িঘর বা বিল্ডিং নির্মানের প্রধান সামগ্রী বালির অভাবে চরম সমস্যায় পড়েছেন নির্মান শ্রমিক থেকে সরকারি বেসরকারি ঠিকাদারী সংস্থা থেকে সকলেই। এখন দেখার কবে নদীঘাটে বালির সমস্যা মিটবে আর কবেই বা মিলবে বিল্ডিং নির্মানের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বালি।