রায়গঞ্জ, ০২ জুন : রায়গঞ্জ ব্লকের শেরপুর অঞ্চলের খলসিঘাটে কুলিক নদীর ওপর পাকা সেতু না থাকায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন গ্রামবাসীরা৷ নদীর দু’কূল ছাপিয়ে যাওয়ায় বাঁশের সাকো ভেসে গিয়েছে জলে। ফলে কোলের সন্তানকে কাঁধে নিয়ে নদী পার হচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
জেলা প্রশাসনিক ভবন থেকে হাতে গোনা কয়েক কিমি দূরে এমন বেনজির ছবি দেখা গেলেও হুঁশ নেই কর্তাদের।স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে ৭ দশক। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজও পাকা সেতু তৈরি হয় নি রায়গঞ্জের ব্লকের শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খলসিঘাটে কুলিক নদীর ওপর। ফলে প্রতিনিয়ত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় গ্রামবাসীদের। জানা গেছে নদীর এপারে কয়েক কিমি দূরে রয়েছে জেলা প্রশাসনিক কার্যালয়। তার কিছু দূরেই রয়েছে রায়গঞ্জ শহর। অন্যদিকে নদীর ওপারে গড়ে উঠেছে গোটা গ্রাম। প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। রয়েছে খোকসা বীণাপাণি জুনিয়র হাইস্কুল, একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পোস্ট অফিস। রয়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রও। কিন্তু যে কোনো কাজে গ্রামবাসীদের নদীর পার করে শহর অথবা জেলা প্রশাসনিক কার্যালয়ে আসতে হয়। সারা বছর নড়বড়ে বাঁশের সাকো দিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও বর্ষার সময় তা আর হয়ে ওঠে না। এবারে প্রাক বর্ষাতেই নদীর দুকূল ছাপিয়ে উঠেছে। ফলে বাঁশের সাকো ভেসে গিয়েছে নদীর জলে। বুধবার বাঁশের সাকো ভেসে যাওয়ায় বিপদে পড়েন শহরের দিকে আসা গ্রামবাসীরা। কেউ কাঁধে কোলের সন্তানকে নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর পার হলেন, আবার কেউ সাইকেল নিয়ে নদীর সাঁতরে পার হলেন নদী৷ জেলা প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এমন বেনজির ছবি উঠে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জনমানসে। গ্রামবাসীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি অথচ কোনো কাজই হয় নি। এমনকি পাকা সেতুর দাবিতে আমরা এর আগে অনেক আন্দোলন করেছি তা সত্ত্বেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। বাধ্য হয়েই আমরা এবারের বিধানসভা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলাম। বাঁশের সাকো ভেসে যাওয়ায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি৷ এভাবে কতদিন? যদিও এব্যাপারে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পূর্ণেন্দু দে বলেন, খলসিঘাটে পাকা সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে সমীক্ষাও করা হয়েছে। কিন্তু মাঝপথেই কোনো কারণে কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। আমরা ফের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদকে চিঠি দেব। অর্থ বরাদ্দ করা হবে।’