নিজস্ব সংবাদদাতা , বংশীহারি , ২৩ নভেম্বর : স্বাধীনতার পর সাত দশক কেটে গেলেও এখনও এলাকায় হাসপাতাল নির্মিত না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের দৌলতপুর এলাকাতে। গ্রামবাসীরা হাসপাতালের জন্য জমি দিলেও সেই জমিতে আজও গড়ে ওঠেনি হাসপাতাল। বর্তমানে ওই জমিতে ধান চাষ করছেন এলাকার লোকজন। স্বাস্থ্য পরিষেবার এই বেহাল দশা নিয়ে তাই তীব্র সমস্যায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
জনসংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সেই নিরিখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৈরি হয় নি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতাল। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দৌলতপুর গ্রামীণ হাসপাতালের নামে জমির কাগজ থাকলেও, কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূলের আমলে তৈরী হল না গ্রামীণ হাসপাতাল। এনিয়ে তীব্র সমস্যায় পড়েছেন ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এলাকায় গ্রামীণ হাসপাতাল না থাকায় তাঁদের ছুটতে হয় দূরবর্তী হাসপাতালে। জানা গেছে, এলাকায় হাসপাতালের নির্মাণের জন্য দৌলতপুর এলাকায় ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মোহাম্মদপুর মৌজায় চার একর জমি নির্ধারণ করা হয় ১৯৭২ সালে। তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক মসলিউদ্দিন আহম্মেদের চেষ্টায় হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব আসে। এরপর এই শুভ কাজে এগিয়ে আসেন এলাকার বাণী কুন্ডু, স্বর্গীয় বৈজু নারায়ণ ঘোষ, স্বর্গীয় কলিমুদ্দিন আহমেদ, স্বর্গীয় বাবুরাম মাহাতো, স্বর্গীয় মদন প্রসাদ প্রমুখ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা। সকলে মিলে হাসপাতালের জন্য চার একর জমি দান করেন। কিন্তু আজ জমি দাতারা কেউ বেঁচে নেই। তবে হাসপাতালের নামে জমির রেকর্ড আছে। অভিযোগ, ৭৭-র পর বাম জামানায় গঙ্গারামপুরের মিনতি ঘোষ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সেই চেষ্টা বিশবাঁও জলে চলে যায়। তবে তৃণমূল জামানায় বিপ্লব মিত্র বিধায়ক থাকাকালীন তাঁর চেষ্টায় কয়েক কোটি টাকা হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। জমি, অর্থ সব বরাদ্দ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় নি। শুধুমাত্র সিমেন্টের পিলার দিয়ে জমি চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে৷ দীর্ঘদিন পর সেগুলো প্রায় ধংসের মুখে। তাই পড়ে থাকা হাসপাতালের জমিতে এখন ধান চাষ হচ্ছে। ফলে এলাকাবাসীদের দীর্ঘদিনের হাসপাতালের স্বপ্ন আজও অধরা।