হরিশ্চন্দ্রপুর, ২৮ জুলাই : বন্যা ত্রাণের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে বিডিও। অভিযোগ দায়েরের পরেই এলাকা ছেড়ে পলাতক স্বামী সহ প্রধান। এই ঘটনা চাউর হতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক এলাকার বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাংগি গ্রামে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ২০১৭ সালের বন্যার পরে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ প্রদানের জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কমিটি গঠন করা হলেও মেলেনি কিছুই। বন্যার এতদিন কেটে গেলেও গ্রামবাসীরা কোন ত্রাণই পাননি। উলটে প্রধান সোনামণি সাহা তার ঘনিষ্ঠদের একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে ত্রাণের টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। ফলে ত্রাণের টাকা থেকে বঞ্চিত রয়ে যান প্রকৃত প্রাপকেরা।গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দ মোহাম্মদ আসিন জানান, ২০১৭ সালে তার ঘর বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে বহুবার পঞ্চায়েত ব্লক অফিসে কাগজ পত্র নিয়ে দেখা করেছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। তাদের নামে টাকা এলেও এখনও পর্যন্ত এলাকার সদস্য কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা করেনি।এলাকার এক বৃদ্ধা মোতলেবা বিবি জানান, তার নামে ঘরের টাকা এসেছে শুনেছেন। কিন্তু বন্যায় ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার পরে কোন সদস্য তার সঙ্গে দেখা করেনি। এমনকি ঘরের টাকা এসেছে শুনে সে বিষয়ে কথা বলতে গেলে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয় টাকা না দিলে ঘরের টাকা পাওয়া যাবে না। এমনকি এলাকায় দেখতে পেয়েছেন যারা টাকা দিয়েছে তাদের পাকা বাড়ি ইতিমধ্যেই আছে তাদের নামে আবার টাকা এসেছে। বিগত বিধ্বংসী বন্যায় তার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভীষণভাবে। তারপর থেকেই পাটকাঠি ও ত্রিপল দিয়ে কোন রকমে মাথাগোঁজার ঠাঁই তৈরি করেছে। ঘরের টাকা না পেয়ে অভিযোগ জানিয়েও কোনো ফল হয়নি।
তবে ক্ষতি-পূরণের টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগে প্রধানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও অনির্বান বসু।যদিও অভিযোগ দায়ের হতেই এলাকা ছেড়ে পলাতক স্বামী-সহ প্রধান সোনামণি সাহা। প্রধান না থাকায় পঞ্চায়েতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে বিভিন্ন কাজে আসা কর্মপ্রার্থীদের।
বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানান, ২০১৭ সালের বন্যায় এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ভীষণ ক্ষতি হয়েছিল। প্রচুর বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল তার সঙ্গে সঙ্গে অনেক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পঞ্চায়েতে ৬ জন মেম্বারের দ্বারা কমিটি গঠিত হয় ক্ষতি গ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছিল তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এলাকার প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এক টাকাও পাননি। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ এই বিষয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিল প্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে কোন সুরাহা হয়নি।যদিও এ প্রসঙ্গে মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার জানান, দূর্নীতির বিষয়ে দল কাউকে প্রশয় দেবে না। এবিষয়ে প্রশাসনকে দল সর্বতোভাবে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও খবর পড়ুন : পুকুর থেকে উদ্ধার মহিলার মৃতদেহ