নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ , ০৫ জানুয়ারী : মাত্র আট বছর বয়সেই শরীরে বাসা বেঁধেছে দুরারোগ্য ব্যাধি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অতি দ্রুত বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট না করলে মৃত্যু শুধু সময়ের অপেক্ষা। রায়গঞ্জ ব্লকের বীরঘই গ্রামপঞ্চায়েতের দেওখন্ডা গ্রামের শিশু অর্ঘ্য বর্মন এখন জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে। বাবা মতিলাল বর্মন পেশায় দিনমজুর। অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছেলের চিকিৎসা।
এই অসহায় পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ছেলেকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য সহযোগিতার কাতর আবেদন জানিয়েছেন অর্ঘ্যর বাবা-মা।
এক সন্তানকে নিয়ে ভালোই দিন কাটছিলো মতিলাল বর্মন ও আল্পনা বর্মন । কিন্তু সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায় বছর খানেক আগে। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পরে তাদের একমাত্র সন্তান অর্ঘ্য। স্থানীয় চিকিৎসক দের পরামর্শ অনুযায়ী পাড়া প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কলকাতায় পাড়ি দেন মতিলাল ও আলপনা। বেশকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কলকাতার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন অর্ঘ্যকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যেতে হবে। জমানো শেষসম্বল টুকু পাথেয় করে এরপর ছেলেকে নিয়ে চেন্নাই পাড়ি দেয় বর্মন দম্পতি। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন অতি দ্রুত বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে অর্ঘ্যর। এর জন্য খরচ পড়বে পঁচিশ লক্ষ টাকা। কিন্তু দিনমজুর পরিবারের পক্ষে এতো বিপুল অর্থ জোগাড় করা এককথায় অসম্ভব। বাধ্য হয়েই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে মতিলাল ও আলপনা। এরপর থেকেই বিনা চিকিৎসা য় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট অর্ঘ্য। ছেলের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা আলপনা বর্মন। আলপনা দেবী বলেন,” চোখের সামনে ছেলের এই অবস্থা সহ্য করতে পারছি না। আপনারা বলে দিন কীভাবে ওকে বাঁচাবো? অনেক জায়গাতেই সাহা্য্যের আবেদন করেছি। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্যরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে ছেলেটাকে বাঁচাতে পারবো। ” বাবা মতিলাল বর্মন বলেন,” ছেলের চিকিৎসার জন্য যেটুকু সঞ্চয় ছিল, সব খরচা হয়ে গিয়েছে। পাড়াপ্রতিবেশীরা সাহায্য করেছেন। এতো বিপুল অর্থ কীভাবে জোগাড় করবো ভাবতে পারছি না। ” অন্যদিকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ললিত প্রসাদ গীনা বলেন,” ছেলেটার জন্য খুব খারাপ লাগছে। পঞ্চায়েত থেকে সাহায্য করেছি। কিন্তু আমাদের ও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। বিভিন্ন জায়গায় সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ঠিক এভাবেই আর্থিক কারনে বিনা চিকিৎসায় নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে ছোট্ট অর্ঘ্য। অসহায় বাবা মায়ের বুকভাসানো কান্নায় সাহায্যের কাতর আবেদন – আমার ছেলেটাকে বাঁচতে দিন,”।