আরসিটিভি সংবাদ : সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফল নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে রাজ্যে। আর সাম্প্রতিককালের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে বাম কংগ্রেস জোট। সেকারণেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ইটাহারে বিরাট যোগদান কর্মসূচি করে নজর কাড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহকারি সভাধিপতি বিনয় সরকারের নেতৃত্বে প্রচুর প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানরা যোগ দিলেন কংগ্রেসে।
আরও পড়ুন – দুর্নীতি ইস্যুতে কড়া আক্রমণ তৃণমূলকে
জানা গিয়েছে এদিনের সভায় কংগ্রেসে যোগ দেন প্রাক্তন জেলা সহকারি সভাধিপতি বিনয় সরকারের স্ত্রী পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সুনীতি সরকার, প্রাক্তন উপপ্রধান আনারুল হক, দুর্লভপুরের প্রাক্তন প্রধান ধীরেন্দ্রনাথ সরকার, গুলন্দর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আব্দুস সামাদ সহ একঝাঁক নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই দল বদলের জেরে ইটাহার বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি আরও জোরদার হল। এর ফল আগামী ভোটবাক্সে পাওয়া যাবে বলেও জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিকে এই দল বদলের ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে ইটাহারে। কারণ এই সমস্ত নেতা কর্মীরা সকলেই প্রাক্তন বিধায়ক অমল আচার্যর অনুগামী বলে পরিচিত। ২০১১ ও ২০১৬ সালে পরপর দু’বার ইটাহার থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন অমল আচার্য।
আরও পড়ুন – সেতুর সংষ্কার না হওয়ায় তীব্র সমস্যায় গ্রামবাসীরা
দক্ষতার সঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন অনেকদিন ধরেই। ফলে জেলার রাজনীতিতে অভিজ্ঞ অমল আচার্য ২০২১ এ গত বিধানসভা ভোটের সময় তৃণমূল থেকে টিকিট না মেলায় অভিমানে দল ছেড়ে বিজেপি যোগ দেন। কিন্তু ভোটে তেমন সুবিধা না হওয়ায় বিজেপিতে যোগ দিলেও গেরুয়া শিবিরে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় নি তাকে। ভোটের পর তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, অর্জুন সিংয়ের মতন অনেক রাজ্যস্তরের নেতা তৃণমূলে ফিরেছেন। সেই মতো অমল আচার্য নিজেও তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সূত্রের খবর, ইটাহারের বর্তমান বিধায়ক ও একদা অমল ঘনিষ্ঠ মোশারফ হোসেন সহ জেলার বেশকিছু বিধায়ক ও নেতার আপত্তিতে তৃণমূলে আর যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি অমল আচার্যর। অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়েও শেষমেশ তৃণমূলে ফিরতে না পারায় অবশেষে তার পুরনো দল কংগ্রেসেই অমল আচার্য ফিরতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন – পরীক্ষার মধ্যেই দুয়ারে সরকার শিবির হাই স্কুলে
কারণ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে বাম আমলে ইটাহারের চাভোট থেকে কংগ্রেসের টিকিটে দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন অমল আচার্য। ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের হাওয়ায় অমলবাবুও ঘর বদল করেন। যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। সেসব এখন অতীত। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে ইটাহারে এদিন কংগ্রেসে য্যোগদান করেন প্রচুর নেতা কর্মী। যাদের মধ্যে অধিকাংশই অমল আচার্যর অনুগামী বলে পরিচিত। এদিন কংগ্রেসে যোগদানের পর প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি বিনয় সরকারও দাবি করেন, অমল আচার্যর কথা মতো বিগত বিধানসভা ভোটের সময় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তারা। এবারেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দল বদলে একই পথে হাঁটলেন। তবে অমলবাবুও আগামীদিনে কংগ্রেসে ফিরবেন বলে মন্তব্য করেন বিনয় সরকার।
অপরদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ইটাহারে কংগ্রেসের এই শক্তিবৃদ্ধিতে অস্বস্তিতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। স্থানীয় বিধায়ক মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, যারা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তাদের দল বদলে তৃণমূলের কোনো ক্ষতি হবে না।