আর সি টিভি সংবাদ , ৩ মার্চ : জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন তিনি। সুন্দর পৃথিবীর আলো তিনি দেখেননি। কিন্তু তাতে কি? মনের দৃষ্টিতেই শিক্ষার আলোয় সব অন্ধকারকে দুরে সরিয়ে দিয়েছেন। আজকের দিনে শারীরিক কিংবা মানসিক প্রতিবন্ধকতার জগতে সকলের আইকন করনদিঘীর সাবধান গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা রায়। স্পেশাল এডুকেটরের তত্ত্বাবধানে গতবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে তাক্ লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
এরপর নিজের যোগ্যতায় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন তিনি। তার বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিমিঃ। রোজ যাতায়াত করতে গিয়ে চূড়ান্ত বিপাকে পরছেন সুনীতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল থাকলেও সুনীতার ক্ষেত্রে বাধা এসেছে বলে অভিযোগ। সুনীতা জানায় প্রায় ৬ মাস থেকে হোস্টেলের জন্য আবেদন করছেন কিন্তু তবুও মেলেনি আশ্রয়।
কিন্তু কেন? দৃষ্টিহীনতার কারনেই কি বঞ্চনা? প্রশ্ন উঠছে। যেখানে সুনীতা বলছেন তিনি নিজেই নিজের সব কাজ করতে পারবেন। শুদু কদিনের জন্য বোনের সহায়তা পেলেই চলবে। হোস্টেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট তাকে ভয়ও দেখিয়েছেন বলে অভওযোগ তার। যাকে ঘিরে খানিকটা হতাশায় এই মেধাবী ছাত্রী।বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা কো-অর্ডিনেটর মুক্তা দত্তগুপ্ত।
ঘর থেকে মা ও দুই সন্তানে দেহ উদ্ধার
এই ঘটনাকে অমানবিক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিন মুক্তাদেবী সুনীতার থাকার বিষয়ে আলোচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করেন।ঘটনাটি নিয়ে চরম উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্পেশাল এডুকেটর কৌশিক দাস। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষই যদি সহযোগীতা না করে তাহলে সমাজের বিশেষ ভাবে সক্ষম ছেলে মেয়েরা আরও পিছিয়ে পরবে।অন্যদিকে এ বিষশে আমরা কথা বলেছিলাম রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য সঞ্চারি রায় মুখোপাধ্যায়ের সাথে। হোস্টেল মনিটরিং কমিটির সাথে বৈঠক করে সমস্যার সুরাহা করা হবে বলে জানান তিনি।বর্তমানে কঠোর প্রতিবন্ধকতাকে দুরে ঠেলে উচ্চ শিক্ষার পথে এগিয়ে চলেছেন এই তরুনী। যেকোনো বঞ্চনা বা প্রতিবন্ধকতা তার অদম্য জেদ আর ইচ্ছেশক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য তা ফের একবার প্রমান করলেন জীবন যুদ্ধের ময়দানে এই লড়াকু তরুনী।