আরসিটিভি সংবাদ –কালের নিয়মে বদলে গিয়েছে সমাজের চালচিত্র। নাগর নদীর বুকে বয়ে গিয়েছে অজস্র স্রোত। পেরিয়েছে অনেক বসন্ত। আজ আর জমিদার নেই, নেই জমিদারিত্বও। কিন্তু রয়ে গিয়েছে ইতিহাস। রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন অঞ্চলে অবস্থিত জমিদার বাড়ি বহু ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে যুগ যুগান্তর ধরে। জমিদারবাড়িতে এখন আর সন্ধ্যে হলে জ্বলেনা ঝাড়লন্ঠন, নাচমহলে শোনা যায়না ঘুঙুরের আওয়াজ। বসে না নহবতও। ইট কাঠ পাথরে এখন জরাজীর্ণ অবস্থা বাহিন জমিদার বাড়ির। তবুও আবেগের টানে, ইতিহাসের টানে এই ভগ্নপ্রায় অবস্থাতেও বহুমানুষ ছুটে আসেন জমিদার বাড়িতে।
আরও পড়ুন –পাকা রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক!
নিরালায় বসে সময় কাটান। তাই স্থানীয় মানুষজন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের দাবী ছিল এই জমিদার বাড়িকে সংস্কার করে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ো তোলার। সেকথা মাথায় রেখে অবশেষে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি এই জমিদার বাড়িকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। প্রসঙ্গতঃ একটা সময় এই কঙ্কালসার জমিদার বাড়ি মাদকাসক্তদের আখরায় পরিনত হয়েছিল। যা রুখতে জমিদার বাড়ির নীচের একটা অংশে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। তারপর পরিবেশ অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই বাড়ির চারিপাশে পিলার দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হবে। তার উপরে মোটা বাঁশ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে নানান শৈল্পিক কারুকার্য।
আরও পড়ুন –ব্যাঙ্ক ডাকাতির অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা কোচবিহারে
প্রাসাদে প্রবেশের জন্য তৈরী হবে একটি মূল ফটক। প্রাসাদ সংলগ্ন মাঠে পর্যটকদের রাত্রিবাসের জন্য তৈরী হবে একাধিক কটেজ, শৌচালয়, বসার জায়গা। সৌরবিদ্যুতায়নের মাধ্যমে আলোকিত করা হবে প্রাসাদ ও সংলগ্ন এলাকাকে। পাশাপাশি সংলগ্ন নাগর নদীর ঘাট সংস্কার করে সেখানে নৌকাবিহারের ব্যবস্থা করা হবে। প্রাথমিক ভাবে ২ টি নৌকা রাখা হবে। এছাড়াও নদীর চরেও আলো, সাউন্ড সহ বিভিন্ন মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এ বিষয়ে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মানস ঘোষ বলেন, রায়গঞ্জ ব্লকের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন গুলির মধ্যে অন্যতম হলো বাহিন জমিদার বাড়ি। এটি রায়চৌধুরী পরিবারের সম্পত্তি ছিল। পরবর্তীতে এই জমিদার বাড়ি ধীরে ধীরে ভগ্ন দশায় পরিণত হয়। বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি বারংবার এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের কাছে দরবার করেছে। অবশেষে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মানস বাবু।