নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১২ জানুয়ারী : পৌষ সংক্রান্তি মানেই নানা স্বাদের পিঠে পুলি দিয়ে রসনা তৃপ্তি৷ বাঙালী সমাজ জীবনের সঙ্গে যা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বাড়ির ঠাকুমা-দিদিমারা চালের গুঁড়োর সঙ্গে দুধ, চিনি, নলেন গুড় দিয়ে তৈরি করেন জিভে জল আনা বিভিন্ন রকমের পিঠে পুলির সঙ্গে পায়েসও। পৌষ-সংক্রান্তির দিন সন্ধ্যে থেকেই গৃহস্থ বাড়িতে শুরু হয়ে পিঠে পুলি বানানোর কাজ।
এই পিঠে তৈরির জন্য প্রয়োজন পড়ে মাটির তৈরি সরা। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা এখন চূড়ান্ত ব্যস্ত মাটির বিভিন্ন আকারের সরা তৈরির কাজে। উৎপাদিত সরাগুলি বিক্রির উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবে জেলার নানা প্রান্তে। এই মাটির সরা ছাড়া সুস্বাদু পিঠে বানানো কার্যত অসম্ভব। আর তাই বাড়তি দু’পয়সা লাভের আশায় সরা তৈরি করতে ব্যস্ত এখানকার মৃৎশিল্পীরা। আগে মাটির দাম কম থাকায় সরা স্বল্প মূল্যে বিক্রয় হলেও লাভের মুখ দেখতে পেতেন তাঁরা। কিন্তু যেহারে কয়েক বছরে কাঁচামালের দাম বেড়েছে, তাতে এক-একটি সরা অনন্ত ২০ থেকে ৩০ টাকায় না বিক্রি না করলে লাভ তো দূর অস্ত, পারিশ্রমের ফসলই ঘরে তুলতে পারেন না মৃৎশিল্পীরা। তবে মাটির এই সরা শুধু রায়গঞ্জেই নয়, জেলা ছাড়াও জেলার বাইরে এমনকি পার্শ্ববর্তী বিহারের কাটিহার জেলাতেও রপ্তানি হয়। তবে এবারে কোভিড ১৯ পরিস্থিতির জন্য আর মাটির সরা বাইরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না৷ সেক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা রায়গঞ্জের বাজার। মৃৎশিল্পীরা বলেন, এবছর করোনার জন্য বাইরে সরা পাঠাতে পারছি না। ফলে ক্ষতির সন্মুখীন হতে হচ্ছে৷ রায়গঞ্জে এখন যা বিক্রি হবে তা দিতে সংসার চালাতে হবে৷ লাভ কতটা হবে বুঝতে পারছি না।’ তবে শুধু কুমোরপাড়াতেই নয়, ভ্যান গাড়ি করে পাড়ায় এই সরা বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। ফলে মকর সংক্রান্তি ঘিরে দু’পয়সা রোজগারের আশায় বুক বাঁধছেন মৃৎশিল্পীরা ৷