নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট : বুধবার এক শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী থানার মহাবাড়ি এলাকায়। এলাকার একটি ইটভাটা পার্শ্ববর্তী পুকুরের মধ্যে ইটভাটার ওই শ্রমিকের দেহ ভেসে ওঠে। শ্রমিকের দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই শ্রমিকের নাম চুনুয়া ওরাও।
মৃত শ্রমিক ওই ইটভাটার একটি ঘরে থাকতেন। জানা গেছে মঙ্গলবার দুপুর স্নান করতে যাওয়ার সময় ওই শ্রমিক ভারত জাকাত মাঝি পরগনাদের দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোলের মাঝে পড়ে। অভিযোগ সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি বাবুলাল মূর্মুর লোকজন তাদের সংগঠনের সদস্য ভেবে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে পার্শ্ববর্তী পুকুরের জলে ফেলে দেয় তার দেহ। এদিন সকালে দেহ ভেসে উঠতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বংশীহারী থানার পুলিশ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কি কারণে মঙ্গলবার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় নি? মৃত শ্রমিকের ছেলে শঙ্কর ওরাওয়ের অভিযোগ, মঙ্গলবার এখানে ব্যাপক গন্ডগোল হয়।
আরোও পড়ুন – বংশীহারীর মহাবাড়ি এলাকায় আদিবাসী সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ । উত্তেজনা , আহত ১০
বাবা স্নান করতে পুকুরে যাচ্ছিল। সেই সময় নিজেদের সংগঠনের লোকজন ভেবে বাবাকে বেধড়ক মারধোর করা হয়। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবিলম্বে বাবার খুনীদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করুক পুলিশ প্রশাসন। এদিকে এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন মৃত চুনুয়া ওরাওয়ের বাড়ির লোকজন। গোষ্ঠী সংঘর্ষের মাঝে পড়ে এক নিরীহ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য আদিবাসী সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পরগনা’র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি বদল হওয়ায় মহাবাড়ি এলাকায় প্রাক্তন সভাপতি বাবুলাল মুর্মু ও তার অনুগামীরা এসে নতুন কমিটির সভাপতি ও লোকজনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ ওঠে৷ কুড়ুল, হাঁসুয়া, লোহার রড, লাঠি ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে চলে মারধর। ঘটনায় কমিটির নতুন সভাপতি আশিস মূর্মু সহ ১০ জন আহত হন।
আরোও পড়ুন – রাস্তা সংস্কারের দাবীতে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ গ্রামবাসীদের
এদিকে সংগঠন সদস্যদের ওপর হামলা ও এক ল গ্রামবাসীর হত্যার প্রতিবাদে বুধবার বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনার কর্মী-সমর্থকরা। এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে এদিন জেলা পুলিশ সুপার অফিস ঘেরাও করে ওই আদিবাসী সংগঠনের দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর ও মালদা জেলা থেকে আসা কর্মী-সমর্থকরা। গোটা ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে৷