নিউজ ডেস্ক, ১৬ অক্টোবর : অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে সেই মৃত্যুর কারণ জানতে পোস্টমর্টেম করা হয়ে থাকে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চিকিৎসক বা পুলিশের ভরসা এই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। কারণ অপরাধের ক্ষেত্রে হত্যার তদন্ত করার কাজেও কাজে আসে এই পোস্টমর্টেম।
যদিও চিকিৎসাবিজ্ঞানে সাধারণত একে বলা হয় ‘অটোপসি’। অর্থাৎ ময়নাতদন্ত বা পোস্টমর্টেম বা অটোপসি মানে হলো মৃতদেহ থেকে আহরিত বিদ্যা, যার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কোনো ব্যক্তির মৃত্যুরহস্য বা জীবিত থাকা অবস্থায় তার সাথে ঘটে যাওয়া নানা অপরাধের ধরণ ও বিবরণ। তবে কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে পোস্ট মর্টেমের বাংলা নাম ময়না তদন্ত কেন? আমরা সকলেই জানি যে, পোস্ট মর্টেম একটি অজানা কারণকে উদ্ঘাটন করে থাকে। অন্ধকার থেকে একটি ঘটনার কারণকে আলোতে নিয়ে আসে। তবে সেক্ষেত্রে শুধু তদন্ত না হয়ে ময়নাতদন্ত নাম হবার কি কারণ?
যদিও এর পেছনেও রয়েছে গভীর রহস্য…. খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, ‘ময়নাতদন্ত’ শব্দটিতে দুটি ভাগ রয়েছে, ‘ময়না’ ও ‘তদন্ত’। আমরা জানি ময়না একটি পাখির নাম আর তদন্ত মানে যাচাই বাছাই। সেদিক থেকে বিবেচনায় “পোস্টমর্টেম” শব্দটির বাংলা অনুবাদ “মৃতদেহ তদন্ত” বা এ জাতীয় কিছু হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটা না করে পোস্টমর্টেমের বাংলা অনুবাদ করা হলো ময়না পাখির নামের সাথে মিল রেখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে কি ‘ময়নাতদন্ত’ পরিভাষাটির সাথে ময়না পাখির কোনো সম্পর্ক রয়েছে?
– হ্যাঁ সম্পর্ক রয়েছে। আসলে ময়না পাখির গায়ের রং কুচকুচে কালো এবং এদের ঠোঁট হলুদ হয়ে থাকে। ময়না পাখি কমপক্ষে তিন থেকে বারোটি স্বরে ডাকতে পারে। ময়না পাখির গায়ের রং কালো হওয়ায় অন্ধকারের মধ্যে ময়না পাখির অবস্থান ঠিক বোঝা যায় না। অন্ধকারের মধ্যে আপনি যদি ময়না পাখি চিহ্নিত করতে চান, তবে তার ডাক শুনে অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে। তাই ময়না পাখির ডাক সম্পর্কে পরিপূর্ণ অভিজ্ঞ মানুষ ছাড়া কেউই অন্ধকারে থাকা ময়না পাখিকে সনাক্ত করতে পারে না। একইভাবে পোস্টমর্টেমের ক্ষেত্রেও একটি ব্যক্তির মৃত্যুর রহস্য বা কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকে। সেই অন্ধকার ও রহস্যময় মৃত্যুর কারণসমূহ উদঘাটন করতে হয় সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সব সূত্রের মাধ্যমে। যা অনেকটা ডাক শুনে ময়না পাখি সনাক্ত করার মতোই। আর এই জন্যই পোস্টমর্টেমকে বলা হয় ময়নাতদন্ত।