নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ০৮ অক্টোবর : এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাস তথা উত্তরদিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জের গর্ব রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস। করোনা আবহে লকডাউনের জেরে দীর্ঘ কয়েকমাস পক্ষীনিবাস বন্ধ থাকলেও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে গত ২রা অক্টোবর অর্থাৎ জাতিরজনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবসের পূণ্যতিথিতেই পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস।
রাজ্য বন বিভাগের নির্দেশে সমস্ত রকম করোনা বিধি মেনেই খোলা হয়েছে পরিযায়ী পাখিদের কুহু কুজনে ভরা কুলিক পক্ষীনিবাস। তবে পক্ষীনিবাসে প্রবেশ করার পূর্বে মুখে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক পাশাপাশি স্যানিটাইজ এবং থার্মাল স্ক্রিনিং করার পরই প্রবেশ করানো হচ্ছে পর্যটকদের। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে রায়গঞ্জ কুলিক বার্ড স্যাঞ্চুয়ারি খুলে দেওয়ায় খুশী রায়গঞ্জবাসী থেকে শুরু করে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা। উল্লেখ্য করোনা সংক্রমণের জেরে গত ১৭ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল উত্তরবঙ্গের অন্যতম এই পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ রাখার পর উপযুক্ত করোনা বিধি মেনে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কুলিক পক্ষীনিবাস। রায়গঞ্জ শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে কুলিক নদীর ধারে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে গড়ে ওঠা এই পক্ষীনিবাসে প্রতিবছর জুন জুলাই মাসে হাজার হাজার মাইল দূর থেকে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভীড় জমায়। ওপেন বিল স্টক, ইগ্রেট, করমোরেন্ট, নাইট হেরন, এই চার প্রজাতির পরিযায়ী পাখিরা এখানে এসে সঙ্গী নির্বাচন করে কুলিক অরন্যের গাছে গাছে বাসা বাঁধে এবং শাবকের জন্ম দেয়। শাবকদের উড়তে শেখা ও শিকার ধরার প্রশিক্ষণ সবটাই পাখিরা করে এই পক্ষীনিবাসে।
তাদের এই কলাকৌশল মুগ্ধ করে পর্যটকদের। পরিযায়ী পাখিদের কলতানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। আর যা দেখতেই প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এই কুলিক পক্ষীনিবাসে। তবে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস নাগাদ এইসব পরিযায়ী পাখিরা ফিরে যায় তাদের পুরোনো গন্তব্যস্থলে। তবে করোনা আবহের জেরে দীর্ঘ সাতমাস ধরে কুলিক পক্ষীনিবাস বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বন দপ্তর ও পর্যটন বিভাগ। পূজোর আগেই কুলিক পক্ষীনিবাস খুলে দেওয়ায় খুশীর আবহ পর্যটক মহলে। রায়গঞ্জ বন বিভাগের আধিকারিক সোমনাথ সরকার জানিয়েছেন, করোনা বিধি মেনে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে কুলিক পক্ষীনিবাস। এবছর লকডাউনের কারনে দূষন কম এবং আগাম ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে অন্যান্য বারের তুলনায় এবছর পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের পাখি গননা অনুযায়ী এবছর রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ী পাখি এসেছে কুলিক পক্ষীনিবাসে।