মালদা, ১৯ জুন : একই পরিবারের চারজনের দেহ উদ্ধার ঘিরে শনিবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের কালিয়াচকে।ঘটনায় বাবা, মা, ঠাকুমা ও বোন সহ পরিবারের চার সদস্যকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে ছোট ছেলের বিরুদ্ধে। খুনের চেষ্টা করা হয় তার দাদাকেও।
পুলিশসুত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম আসিফ মহম্মদ। কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় তাদের বাড়ি। আসিফের দাদা আরিফের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।পুলিশকে লেখা অভিযোগপত্রে তার দাদা আরিফ জানিয়েছেন যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে চার জনকে খুন করার পাশাপাশি তাকে খুন করার চেষ্টা করে ভাই আসিফ। সে কোনমতে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচে। স্থানীয়সুত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন এই বাড়ির চারজন সদস্য জাওয়াদ আলি, তার মা আলেকজান খাতুন, স্ত্রী ইরা বিবি এবং মেয়ে আরিফা খাতুন। গ্রামের লোকেরা জানতেন যে পরিবারের ওই ৪ সদস্য অন্যত্র থাকতেন। সমাজবিচ্ছিন ওই যুবক এলাকার কারো সঙ্গে মেলামেশা করত না। এলাকার কেউ সে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারত না। বাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সিসিটিভি লাগানো রয়েছে। তার ঘর থেকে ৪-৫টি ল্যাপটপ, একাধিক ফোন, সাউন্ড সিস্টেম, টিভি, সিসিক্যামেরা সমেত বহু অত্যাধুনিক গ্যাজেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিজের বাড়িতেই ল্যাব তৈরি করেছিল সে। মিঠু মহম্মদ নামে এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন,এলাকার কারো সঙ্গে মিশত না সে। এমনকী ওই বাড়িতে কেউ ঢুকতে পারত না। খাওয়ারও হোম ডেলিভারি মারফত আসতো। সে পড়াশোনা করত। কিন্তু কোথায় পড়ত তা জানতেন না তারা। এরপরেই এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় হতবাক গ্রামবাসীরা।এদিন দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। দীর্ঘ চারমাস পর ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় অভিযুক্তের দাদারভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অন্যদিকে এদিন এই বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। কথা বলেন পুলিশ আধিকারিক ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে।গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, একই পরিবারের চারজন খুন হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে পরিবারেরই ছেলের বিরুদ্ধে। প্রায় চারমাস পরেঘটনাটি প্রকাশ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে এলাকাবাসীও কেন সন্দেহ প্রকাশ করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তবে পুলিশ প্রশাসন গোটা ঘটনা তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।