মানিকচক, ২৫ আগস্ট : করোনা যুদ্ধে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে তাদের ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে। কিন্তু বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর এলাকায় অবস্থিত খৈরাবাদ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে পার্শ্ববর্তী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ক্লাব ভবন থেকে নিত্যদিন পরিষেবা দিয়ে চলছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
উল্লেখ্য, প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন মানিকচকের মথুরাপুর এলাকায় অবস্থিত খৈরাবাদ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। পাশাপাশি জলমগ্ন পার্শ্ববর্তী আইসিডিএস কেন্দ্র এবং ভূমি দপ্তরের অফিসও। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুটি অফিস বন্ধ থাকলেও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ করা কার্যত দুস্কর হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মথুরাপুর অঞ্চল এলাকার গর্ভবতী মহিলা সহ শিশুদের টিকা দেওয়া থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত রকম কাজ করা হয়। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জেরে প্রতিবছর বর্ষায় জল যন্ত্রণায় সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। এ ব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে বারংবার জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ প্রসঙ্গে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী সান্তনা দাস জানান, প্রতিবছরই বর্ষার সময় প্লাবিত হয়ে যায় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে জলে ডুবে থাকছে স্বাস্থ্যভবন। পাশে যে সমস্ত অফিস রয়েছে তারা নিজেদের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে পরিষেবা দেওয়া আমাদের পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষার এই জলের তলায় থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছে পরিষেবা দিতে হচ্ছে। জলে সাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে সাপের দেখা মিলছে। গোটা পরিস্থিতির কথা পঞ্চায়েত প্রশাসনকে জানানো হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা। বছরের বর্ষার সময় তিন মাস চরম সমস্যায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিতে হয়। কিন্তু পাশে থাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এসে নিজেদের ভবনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। সমস্ত ওষুধপত্র, নথিপত্র সমস্ত কিছুই ক্লাব ভবনে রেখে যতটা পারা যায় গর্ভবতী মহিলা থেকে শিশুদের পরিষেবা দিতে হচ্ছে। যদিও এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুবিধার্থে ক্লাব হবে অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেই ভবন থেকে নিত্যদিন পরিষেবা দিয়ে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এপ্রসঙ্গে ক্লাব সম্পাদক সৌরভ মালাকার জানান, প্রতিনিয়ত গর্ভবতী মায়েরা ও শিশুরা পরিষেবা নিতেই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে। কিন্তু বর্তমানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র জলের তলায় থাকায় পরিষেবা দেওয়াটা দুস্কর হয়ে উঠেছে। আপাতত জল না কমা পর্যন্ত তাই ক্লাব ভবনকে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। সত্যিই খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে পাশাপাশি তিনটি সরকারি দপ্তরের ভবনগুলির। দ্রুত যাতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাই গ্রাম পঞ্চায়েতকে বিষয়টি জানানো হয়েছে ক্লাবের তরফে। এপ্রসঙ্গে মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিলন মন্ডল জানিয়েছেন, ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে।