ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের (Bikash Bhawan) সামনে এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকদের বিক্ষোভ অভিযান চরম উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছায়। ঘেরাও অভিযান চালাতে গিয়ে তারা লোহার বিশাল গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকেও।
এ সময় আচমকা বিকাশ ভবনের ভিতরে ঢুকে যান বিধাননগর পৌরনিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta)। তাঁকে ঘিরে চাকরিহারারা বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি হাত থেকে চলে যায়।
বিধায়কের চরম উত্তেজিত আচরণে বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকরা আক্রান্ত হন। সব্যসাচী তাঁদের হুমকি দিতে থাকেন এবং মারধর পর্যন্ত করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “তোমরা জোর দেখালে আমরাও জোর দেখাব, আমি আমার ক্ষমতা দেখাব।” চাকরিহারাদের উদ্দেশে তাঁর কথায়, “আমার গাড়ির সামনে বসলেই চাকরি পাবে? এই বাধা সরাতে ৩০ সেকেন্ড লাগবে।”
চাকরিহারারা তাঁকে ঘিরে ‘চাকরি চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন এবং গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যান। গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম হন নিরাপত্তারক্ষীরা।
বিক্ষোভকারীদের ‘চোর চোর’ স্লোগান উঁচিয়ে দেওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে ছবি ও খবর সংগ্রহ করছিলেন সাংবাদিকরা। প্রথমে নমনীয় ছিলেন বিধায়ক, কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
পরবর্তীতে সব্যসাচীর অনুগামীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হেনস্থা করা হয়। এক সাংবাদিকের বুকে ধাক্কা মেরে তাঁরা তাড়ানো হয়।
নিজে সব্যসাচীও পরে ঘটনাস্থলে এসে এক সাংবাদিকের গাল টিপে বলেন, “আমার গাড়ি আমার ওয়ার্ডে আটকালে, তো কেউ আর আদর করবে না।” পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বাধ্য হয়ে অন ক্যামেরা বলেন, “যা ঘটেছে, তা উত্তেজনার বশে।” পরে তার বক্তব্য ফিরিয়ে নেন।
এই ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়েছে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিধায়কের এমন আচরণ কতটুকু গ্রহণযোগ্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহার কি সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে বাড়ছে? সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হেনস্থা ও হুমকির ঘটনা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ দেড় ঘণ্টার চরম আল্টিমেটাম! মুখ্যমন্ত্রীর দেখা না মিললে আরও ভয়ঙ্কর হবে SSC আন্দোলন