ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশে আটক হওয়ার বাড়ি ফিরলেন কোচবিহারের কৃষক উকিল বর্মন (Ukil Burman)। বুধবার রাতে শীতলকুচি থানায় এসে পৌঁছান তিনি। সীমান্তপারের জমিতে কাজ করতে গিয়ে এপ্রিল মাসে নিখোঁজ হন উকিল, যাঁকে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ফিরে আসার খবর প্রথমে জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনি এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)-কে ধন্যবাদ জানান।
দীর্ঘদিন ধরে বিএসএফ (BSF) এবং বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি (BGB)-র মধ্যে একাধিকবার ফ্ল্যাগ মিটিং হলেও প্রথমদিকে সুফল মেলেনি। কৃষকের পরিবার বারবার আবেদন জানায়, কারণ উকিল বর্মন ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রী শোভা বর্মন (Shobha Burman) কার্যত ভেঙে পড়েন। পরিবার চলত উকিলের রোজগারে।
আরও পড়ুনঃ ‘চাকরি চোর’ স্লোগানে ঘেরা মেয়র, সাংবাদিক মারধরে তোলপাড়
উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ কুমার যাদব (Rajesh Kumar Yadav) আশ্বাস দিয়েছিলেন যে প্রশাসন চেষ্টার কসুর করছে না। অবশেষে প্রশাসনিক উদ্যোগে বিজিবি উকিলকে মুক্তি দেয়। তাঁর মুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও কম হয়নি। বিশেষ করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস, বিরোধী শুভেন্দুকে নিশানা করে প্রশ্ন তোলে— কোথায় গেলেন সেই হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি, যখন এক হিন্দু কৃষক বাংলাদেশে আটকে পড়েন?
দিনহাটা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha) কটাক্ষ করে বলেন, “যেখানে বলা হয় হিন্দু বিপদে, সেখানেই উকিল বর্মনের মতো কৃষক যখন বাংলাদেশে বন্দি, তখন বিরোধী নেতা কোথায় ছিলেন?”
এই পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার শুভেন্দু অধিকারী সংবাদ মাধ্যমে উকিল বর্মনের বাড়ি ফেরার খবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। তিনি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতা ও সহানুভূতির প্রশংসা করেন।
একইদিন পাকিস্তান থেকে ফিরে আসেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম (Purnam)। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ঘরে ফেরেন উকিল বর্মন। ফলে এদিনটি দুই দেশের সীমান্তে আটকে পড়া ভারতীয়দের পরিবারের কাছে হয়ে উঠল বিশেষ স্মরণীয়।