নিউজ ডেস্ক, ২৩ নভেম্বর : চুল সৌন্দর্যের প্রতীক। সেই প্রাচীনকাল থেকেই চুলের যত্ন নেওয়ার নানা রীতি লক্ষ্য করা যায়। কালো ঝলমলে চুল মানুষের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে বহুগুণে। বয়সের সাথে সাথে চুলের রঙেও আসে পরিবর্তন। কালো থেকে ধূসর এবং তারপর ধবধবে সাদা হয়ে যায় চুল। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে অনেকেরই অল্প বয়সে চুল পেকে যায়। কম বয়সে চুল পাকা মানে অস্বস্তিকর একটি বিষয়। গবেষকেরা বলছেন, কম বয়সে চুল পাকার পেছনে জিনগত প্রভাবের পাশাপাশি, অস্থিরতা, ধূমপান, দূষণ, মানসিক চাপ প্রভৃতি বিষয় কাজ করে।
চুল পাকলে তা রং করার জন্য নিয়মিত রাসায়নিক ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হয়। স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাবার অধিক গুরুত্বপূর্ণ। পাকা চুলকে কালো করার জন্য বাজারে নানান পণ্য পাওয়া যায়। তবে এসব পণ্যের বেশিরভাগই চুলকে সাময়িক সুন্দর রাখলেও ধীরে ধীরে তা চুলের ক্ষতি করে। বিশেষ করে বাজারে যেসব কেমিক্যাল মেশানো কৃত্রিম রং পাওয়া যায় তা শুধু চুলেরই নয় মাথার ত্বকেরও বেশ ক্ষতি করে। এসব রঙে অ্যামোনিয়া থাকে যার ফলে অনেকেই অ্যালার্জিতে ভোগে থাকেন। তবে এমন কিছু জিনিস আছে যেসব দিয়ে আপনি প্রাকৃতিক উপায়েই চুল কালো রাখতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক –
১) রান্নার ক্ষেত্রে পেঁয়াজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তবে পেঁয়াজ বাটা চুল পাকা রোধেও অত্যন্ত কার্যকরী অস্ত্র। পেঁয়াজ বাটা রস কিছুক্ষণ মাথার চামড়ায় ও চুলে ম্যাসাজ করতে হবে এরপর ৩০ মিনিট বাদে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়া কয়েক সপ্তাহ কন্টিনিউ করুন। পাকাচুল কালো হয়ে যাবে। তবে দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রতিদিন একবার করে এই উপায় অনুসরণ করতে হবে।
২) কড়া এক কাপ কফি বানিয়ে তো পান করেছেন বহুবার। কিন্তু জানেন কি আপনার মাথার অকালে পেকে যাওয়া চুল কালো করতে কফি কতটা উপকারী? কড়া করে কফি বানিয়ে নেবার পর এটিকে ঠান্ডা হতে দিন। এরপর পুরো মাথায় ভালোমতো মেখে নিন এই কফি। কুড়ি মিনিট বাদে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৩) চুলের যত্নে নারকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। পাকা চুলের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন ৪ চা চামচ নারকেল তেলের সাথে আড়াই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে উক্ত মিশ্রণ চুলের গোড়ায় এবং মাথার চামড়ায় লাগান। দুই সপ্তাহের মধ্যেই পাকা চুল কালো হয়ে উঠবে। তার পাশাপাশি আপনার মাথার চামড়া সুস্থ থাকবে, খুশকি হবে না এবং চুলও হবে উজ্জ্বল।
৪) তিলের বীজ এবং বাদাম তেল এই দুটি বাজার বেশ সহজলভ্য। প্রথম তিল বীজ গুঁড়ো করে নিন। এরপর তা বাদাম তেলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি চুলে ও মাথার চামড়ায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলেন। এই প্রক্রিয়া সপ্তাহে তিন দিন করার চেষ্টা করুন।
৫) চুলের জন্য খুবই উপকারী। ‘ভিটামিন এ’, ‘ভিটামিন ই’, ক্যালসিয়াম, কপার, তামায় সমৃদ্ধ কারিপাতা অকালপক্বতা রোধ করে। চুলকে মোলায়েমও বানায়। নারকেল তেলে কারিপাতা মিশিয়ে ফোটান। হালকা কালচে আভা দেখা দিলে বুঝবেন আর গরম করার দরকার নেই। এ বার ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ভাল করে চুলের আগাগোড়া লাগিয়ে নিন। এরপর হাল্কা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’ থেকে তিনদিন এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
৬) আমলকির গুঁড়ো আর নারকেল তেল দিয়ে চুল কালো করার প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন ঘরেই। আমলকির গুঁড়ো নিন এক টেবিল চামচ পরিমাণ। এর সাথে তিন টেবিল চামচ ভালো মানের নারকেল তেল নিয়ে গরম করুন। খেয়াল রাখবেন পাত্রটি যেন একটু গভীর হয়। আমলকির গুঁড়ো কালো হতে আরম্ভ করলে গ্যাস থেকে নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হবার পর ছেঁকে নিন। এটি কোনো বোতল বা শিশিতে ভরে সংরক্ষণ করুন। শ্যাম্পু করার আগে এই তেলে মাথায় ভালোমতো মেখে নিলে বেশ উপকার পাবেন পাকা চুল কালো করার ক্ষেত্রে। সপ্তাহে দুইবারের বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। তবে এটিও খেয়াল রাখবেন শ্যাম্পু যেন সালফেট মুক্ত হয়।