নিউজ ডেস্ক : প্রয়াত হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকাল ৮.২০ মিনিটে কলকাতার পাম অ্যাভিনিউ এর বাড়িতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
দূর্ঘটনায় একই স্কুলের ২ শিক্ষকের মৃত্যুতে ভারাক্রান্ত গোটা গ্রাম
১৯৪৪ সালে উত্তর কলকাতায় ভট্টাচার্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধবাবু। সেই পরিবারের আর এক বিখ্যাত মানুষ ছিলেন কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য,যিনি সম্পর্কে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাকা। ১৯৬১ সালে বুদ্ধদেব বাবু কলকাতার শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে মানবিকী বিদ্যা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন, ১৯৬৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা নিয়ে কলা বিভাগে সাম্মানিক স্নাতক হন। যোগ দেন শিক্ষকতার চাকরীতে।
এএনএম-জিএনএম পরীক্ষার হলে মোবাইলে টুকলি, আটক ৯
কলেজে পড়ার সময় থেকেই বাম ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গের উত্তাল খাদ্য আন্দোলনের পাশাপাশি ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
বেহাল নিকাশি, জমা জলে দূর্ভোগের যাতায়াত এলাকাবাসীর
১৯৭৭ সালে কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন বুদ্ধবাবু। কিন্তু ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের প্রফুল্ল কান্তি ঘোষ এর কাছে এই কেন্দ্রেই ৭৮২ ভোটে পরাজিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি তার নির্বাচনী কেন্দ্র পরিবর্তন করে যাদবপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই কেন্দ্র থেকে তিনি টানা ৫ বার জয়ী হন। ২০১১সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি যাদবপুর কেন্দ্র থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের মণীশ গুপ্তের কাছে পরাজিত হন। তিনি সি. পি. আই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, সি. পি. আই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সি. পি. আই (এম) পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন দীর্ঘদিন।
নব নির্বাচিত বিধায়ককে সংবর্ধনা জানাল জেলা তৃণমূল
১৯৭৭-এ প্রথম বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার সময়ই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব বাবু। পরে এই বিভাগটিই তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ নামে পরিচিত হয়। ১৯৮৭ সালে এর সঙ্গে জুড়ে যায় স্থানীয় প্রশাসন এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের দায়িত্বও। দায়িত্ব আরও বাড়ে ১৯৯৬ সালে। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র (আরক্ষা), তথ্য প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্বও পান তিনি।
১৯৯৯ সালে জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্ব কালের শেষলগ্নে উপ মুখ্যমন্ত্রী হন বুদ্ধদেব। ২০০০ সালের ৬-ই নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে প্রথম বারের জন্য বসেন তিনি। তবে, তা ছিল জ্যোতি বসুর অসুস্থতার কারণে বসা। কিন্তু ২০০১-এর ১৮ মে ত্রয়োদশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০৬ সালেও তাঁর নেতৃত্বেই আসে ফের বিপুল জয়। এরপর থেকেই পতন শুরু হয় বাম সরকারের। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম কাণ্ডের জেরে ২০০৯ সালের লোকসভায় চূড়ান্ত খারাপ ফলের পর ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হয় বামফ্রন্ট। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কে। এরপর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া বুদ্ধদেব বাবুর ঠিকানা হয় পাম অ্যাভিনিউ এর নির্জন অতিসাধারণ ঘরে। এই ঘরেই বৃহস্পতিবার জীবনদীপ নির্বাপিত হল প্রবাদপ্রতিম এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের