নিউজ ডেস্ক: তিনি বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা। নাম মনোরঞ্জন ব্যাপারী। মঙ্গলবার রিক্সা চালিয়ে বিধানসভা যাত্রা করলেন ৭৪ বছর বয়সী এই বিধায়ক। মঙ্গলবার সকালে কিড স্ট্রিটের এমএলএ হস্টেল থেকে রিক্সার প্যাডেলে পা রেখে বিধানসভার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।
এনিয়ে নিজের মতামত খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করলেন তিনি।বললেন,সমাজের নিপীড়িত মানুষদের পাশে রয়েছেন তিনি।তাদের কথা বিধানসভায় তুলবেন তিনি।একসময় রিকশা চালিয়ে সংসার প্রতিপালন করেছেন।ফলে সেই পেশার মানুষদের তিনি ভুলে যান নি।তা প্রমান করতেই রিকশা চালিয়ে বিধানসভা যাবেন তিনি।কে এই মনোরঞ্জন ব্যাপারী? মনোরঞ্জন ব্যাপারী বাংলাদেশের ১৯৫০ সালে বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের কারণে তাঁর পরিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে চলে আসেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৩ বছর।
আরোও পড়ুন – ২০ শে ফেব্রুয়ারি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহন, মুখ্যমন্ত্রী পদে কে?
১৯৬৯ সাল পর্যন্ত বাঁকুড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার ঘুটিয়ারী শরিফ ইত্যাদি নানা জায়গায় উদ্বাস্তু শিবিরে ছিন্নমূল পরিবারের সাথে বসবাস করেন।একসময় জীবিকার খোঁজে তিনি দণ্ডকারণ্য অঞ্চলে চলে যান। অমানুষিক পরিশ্রম, বর্ণবিদ্বেষমূলক অপমানের মধ্যে দিয়ে তাঁকে বড় হতে হয়েছে। মধ্যভারতের নকশাল আন্দোলনের শ্রমিক নেতা শংকর গুহনিয়োগীর সাথে তাঁর যোগাযোগ ছিল। রাজনৈতিক কারণে জেলে থাকার সময় নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন তিনি। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মালবাহক, শ্রমিক, কুলী এমনকি রিকশাচালকের কাজ করতে করতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যেই সাহিত্য সাধনা করেন এই দলিত সাহিত্যিক।
আরোও পড়ুন – ভারতের নতুন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হলেন জ্ঞানেশ কুমার, কে এই জ্ঞানেশ কুমার
দক্ষিণ কলকাতার মুকুন্দপুরে হেলেন কেলার বধির বিদ্যালয়ে রান্নার কাজও করেন তিনি।মনোরঞ্জন ব্যাপারী একজন বাঙালি দলিত সাহিত্যিক, যিনি ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি কর্তৃক সুপ্রভা মজুমদার স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে হুগলী জেলার বলাগড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে তিনি জয়ী হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন।তিনি যে রিকশাচালক ছিলেন এবং রিকশাচালকদের পাশে রয়েছেন তা বোঝাতেই মঙ্গলবার রিকশা চালিয়ে বিধানসভার উদ্দেশ্যে রওনা হন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।তবে নিরাপত্তাজনিত কারনে রিকশা চালিয়ে বিধানসভা পর্যন্ত তাঁকে যেতে দেয় নি পুলিশ প্রশাসন।পরবর্তীতে পায়ে হেঁটেই তিনি যান বিধানসভায়।
আরোও পড়ুন – মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে উদ্ধার মোবাইল ফোন! তারপর যা ঘটলো