নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশ্বের নানাপ্রান্তেই অহরহ চলে নানান তাত্ত্বিক আলোচনা।কিন্তু এই গুরুগম্ভীর তত্ত্বকথা থেকে দূরে বিহারের কিশানগঞ্জের খাগড়া এলাকায় নি:শব্দে সীমানা ভাঙ্গার গল্প বুনে চলেছে অষ্টাদশীর নন্দিনী। সমাজের অচলায়তনকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে পরিবারের ঢাল হিসেবে শক্ত হাতে ধরেছে টোটোর স্টিয়ারিং। যা দিয়ে সমাজের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে আগামীর লক্ষ্যে।
ক্ষতির মুখে বিঘোরের বেগুনের ফলন
অনটনের সংসার। বাড়িতে সাতজনের মুখে অন্ন যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো গৃহকর্তাকে। ফলে বাবার পাশে দাঁড়াতে টোটোর স্টিয়ারিং ধরেছে মেয়ে। বর্তমান সময়ে মেয়েরা উড়ান দিয়েছে মহাকাশে। কিন্তু বাংলা বিহার সীমান্তে বিহারের কিশানগঞ্জ জেলার খাগড়াতে এমনই এক ছকভাঙ্গা গল্পকথার রচনা করেছে নন্দিনী। নন্দিনী কুমারী কিশানগঞ্জ গালর্স হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। কিশানগঞ্জ নগর পরিষদের ৩১নং ওয়ার্ডের খাগড়া এলাকায় সরকারি জমিতে বসবাস।
বিএসএফের রেইজিং ডে।নানা পরিকল্পনার কথা ঘোষণা
বেড়ার ঘরে প্ল্যাস্টিকের ছাউনি দিয়ে কোনমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই। কিন্তু স্বপ্ন যে আরো উচুতে ওঠার। ফলে টোটোচালক বাবার পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে , সংসারে কিছুটা সুরাহা আনতে টোটো চালানোর শুরু নন্দিনীর। টোন টিটকিরি , হাসিমজা, সমাজের অবাক দৃষ্টি সবকিছুকে হেলায় সরিয়ে টোটো চালিয়ে নন্দিনী প্রমাণ করেছে মেয়েরা ছেলেদের থেকে কম নয় কিছুতেই। নিজের পাশাপাশি ভাইবোনদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে সমাজের কাটা গন্ডীকে অবলীলায় পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস তার।
আদালত রায়ে জমি পেলেও বাধাদান মাফিয়াদের
পড়াশোনা করে আগামীতে নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর হার না মানা এই কিশোরী। যদি সরকার বা সহৃদয় কোন সংস্থা পাশে দাঁড়ায়, তবে স্বপ্নপূরণের ধাপ অতিক্রম করা কিছুটা সহজ হবে বলে কাতর আর্জি নন্দিনীর।মেয়ের এই নিয়মভাঙ্গা পদক্ষেপে গর্বের সুর বাবা বিনোদ কুমার যাদবের গলায়। মেয়ের টোটো চালানো নিয়ে শুরুতে কিছুটা সংকোচ থাকলেও, এখন তা অহঙ্কারের কারণ।
স্কুলে বিষাক্ত ফল খেয়ে অসুস্থ কমপক্ষে ২০ জন পড়ুয়া
পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে নন্দিনীর এই দায়িত্বপালনে গর্বিত পিতা তিনি। পড়াশোনা শিখে দায়িত্বশীল মানুষ হোক তার সকল সন্তান, এটাই একমাত্র কামনা বিনোদবাবুর।
অন্যদিকে নন্দিনীর ছকভাঙ্গা গল্পকে কুর্নিশ জানিয়েছেন কিশানগঞ্জ নগর পরিষদের চেয়ারম্যান ইন্দ্রদেব পাসওয়ান। সরকারিভাবে সবরকমভাবে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে তার স্বপ্নপূরণে সচেষ্ট হবেন বলে আশ্বাস ইন্দ্রদেববাবুর।