নিজস্ব সংবাদদাতা , মালদা , ০৪ নভেম্বর : পন না দেওয়ায় বালিশ চাপা দিয়ে এক গৃহবধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদার পুখুরিয়া থানার পরানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতার নাম আসমিরা খাতুন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ওই বধুর স্বামী এবং শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ বছর আগে চাঁদপুরের আসমিরার বিয়ে হয় পেশায় শ্রমিক বিষানপুরের শেখ হাইউলের সঙ্গে। বিয়ের সময় দাবিমতো পণের টাকা দিতে না পারায় কিছুদিন বাদে স্ত্রীকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন হাইউল।সেই টাকা মেটাতে তার তিন ভাই ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যান। অবশেষে টাকা পেয়ে ১০ মাস বাদে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যান হাইউল। তাদের দু’বছরের শিশুকন্যা রয়েছে , এছাড়া ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন আসমিরা। কিন্তু টাকার দাবিতে সম্প্রতি আসমিরার উপরে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ফের নির্যাতন শুরু করে বলে অভিযোগ। এবিষয় নিয়ে এলাকায় চারবার সালিশি সভাও বসে। হাইউল সেই সভায় আর নির্যাতন করবে না বলে জানালেও সমস্যা মেটেনি। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ , কয়েকদিন ধরে ফের কুড়ি হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য আসমিরার উপরে নির্যাতন শুরু হয়। এমনকি টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ায় মঙ্গলবার টাকার জন্য বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন আসমিরা। তবে টাকা না মেলায় ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন। রাতে মেয়ের বাড়িতে গন্ডগোল হচ্ছে শুনে সেখানে গিয়ে ওই গৃহবধূর মা জোলেদা বেওয়া দেখেন যে খাটের নিচে পড়ে রয়েছে আজমিরার দেহ। অপরদিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এবিষয়ে, মৃতার মা জোলেদা বেওয়া বলেন মঙ্গলবার পরিবারের একজন মারা গিয়েছিল। সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তাই ওকে বলি ফিরে গিয়ে স্বামীকে বুঝিয়ে বলতে। কিন্তু ওরা মেয়েটাকে মেরে ফেললো। ওদের কঠোরতম শাস্তি চাই। অপরদিকে পুখুরিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে , খুন নাকি অন্য কারনে মৃত্যু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তা জানা যাবে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।