নিউজ ডেস্ক , শাশ্বতী চক্রবর্তী : আজ মাদার টেরিজার ১১০ তম জন্মদিন। যাঁর আসল নাম ছিল আনিয়েজ গঞ্জে বয়াজিউ। তিনি ১৯১০ সালের এই দিনে অটোমান সাম্রাজ্যের আলবেনিয়া রাজ্যের স্কপিয়ে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল নিকোলো ও মায়ের নাম ছিল দ্রানা বয়াজিউ। মাত্র আট বছর বয়সে তার বাবা মারা যান।
ছোটবেলা থেকেই সন্ন্যাস জীবন ও মানুষের সেবা করার প্রতি টান ছিল তার।আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত তিনি সেখানেই কাটান এরপর “সিস্টার্স অফ লোরেটো” সংস্থায় যোগ দেন তিনি।১৯২৯ সালে তিনি আয়ারল্যান্ড হয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচার অভিযানে আসেন। জীবনের বাকি অংশ তিনি ভারতেই থেকে যান।
তিনি ছিলেন একজন আলবেনীয় বংশোদ্ভুত ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও ধর্মপ্রচারক।
“কেবল সেবা নয়, মানুষকে দাও তোমার হৃদয়। হৃদয়হীন সেবা নয়, তারা চায় তোমার অন্তরের স্পর্শ” — এরকম নিছক উক্তি শুধু তিনি মুখেই বলে যাননি, আমৃত্যু আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সারাবিশ্বের মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন মহীয়সী মাদার তেরেসা। ১৯৩১ সালের ২৪ মে তিনি সন্ন্যাসিনী হিসেবে প্রথম শপথ গ্রহণ করেন। এরপর মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করার সংকল্পে তিনি লরেটো স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে মাত্র ১২ জন সদস্য নিয়ে ১৯৫০ সালের ৭ই অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করেন “মিশনারিজ অব চ্যারিটি”। যার শাখা বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে আছে। এর পাশাপাশি ১৯৫২ সালে তিনি গড়ে তোলেন এই চ্যারিটির অধীনেই “নির্মল হৃদয়” ও কুষ্ঠ রোগীদের জন্য “শান্তি নগর”। ১৯৫৫ সালে মাদার টেরিজা স্থাপন করেন “নির্মল শিশুভবন”। ভারতের বাইরে ১৯৬৫ সালে ভেনিজুয়েলায় মিশনারি অব চ্যারিটির শাখা প্রতিষ্ঠার পর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৯ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি তাঁর সেবাকার্যের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার এবং পুরস্কারের সব অর্থ তিনি গরিব দুঃখীদের দান করে দেন।
এরপর ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন লাভ করেন। ১৯৮২ সালে বৈরুত অবরোধের চূড়ান্ত প্রতিকূল সময়ে মাদার টেরিজা যুদ্ধের একেবারে সামনের সারিতে থেকে হাসপাতালে আটকে পড়া ৩৭ শিশুকে উদ্ধার করেন।
মাদার টেরিজার মৃত্যুকালে গোটা বিশ্বের ১২৩টি দেশে এইডস ও কুষ্ঠ রোগের এর চিকিৎসাকেন্দ্র, ভোজনশালা, শিশু ও পরিবার পরামর্শ কেন্দ্র, অনাথ আশ্রম ও বিদ্যালয়সহ মিশনারিজ অব চ্যারিটির ৬১০টি কেন্দ্র বিদ্যমান ছিল। তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে সংস্থা গুলো সংখ্যা হ্রাস পায়।
১৯৯৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন এই মহামানবী। ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে সেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেন ও স্বীকৃতি প্রদান করেন।
আরও পড়ুন : একনজরে দেখে নিন পুর-ওয়ার্ড ভিত্তিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা