আর জি কর কান্ডের ঘটনা ও প্রতিবাদ
ভয়ঙ্কর সেই রাত । আরজি করে ঘটে গিয়েছিল এক নৃশংস অত্যাচারের ঘটনা । ৯ই অগাষ্ট এর ক্ষতটা এখনও জ্বলজ্বলে সকলের মনে । অভয়াকে ধর্ষণ ও খুন হতে হয়েছিল । দোষীদের শাস্তির দাবি অর্থাৎ ফাঁসি চেয়ে,রাজ্য তথা দেশ এমনকি বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল । গোটা দেশ বিদেশের মানুষ একত্রিত হয়ে অভয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছে । দিনের পর দিন রাত দখল কর্মসূচি অথবা আমরণ অনশনে বসতে হয়েছে প্রতিবাদি মানুষ ও জুনিয়র চিকিৎসকদের ।
গ্রেফতার (সঞ্জয় – সন্দীপ – অভিজিৎ)
ঘটনার পরের দিনই ১০ই অগাস্ট ধর্ষণ ও খুন মামলার মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার ওরফে সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও বা তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষনের ঘটনায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এরপর ৯০ দিনের মাথায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। যার ফলে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল।
দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রাই
শুনানি শেষে ১৮ই জানুয়ারি আর জি কর মামলায় সঞ্জয় রাইকে দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহ নগর ও দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বান দাস। আদালতের রায়ের দিকেই তাকিয়ে ছিল সব মহল । শনিবার শিয়ালদহ আদালতে BNS ৬৪/ ৬৬/ ১০৩ ( ১ ) ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধর্ষণ, ধর্ষণ করে মৃত্যু ও খুন এই তিন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রাইকে। ২০ জানুয়ারি সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে। তবে কেমন আছেন সঞ্জয়? দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে তাকে প্রেসিডেন্সি জেলের পয়লা বাইশের তিন নম্বর সেলে রাখা হয়েছে। জেল সূত্রে খবর, শনিবার কারারক্ষীরা বারবার তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে কারও সঙ্গে কথা বলেননি সঞ্জয় । চিকিৎসকরা তাকে ওষুধ দিলেও ছুঁয়ে দেখেননি। প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জেলে আসার পর থেকেই চুপ করে বসে রয়েছেন সঞ্জয় । বর্তমানে সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা হয়েছে তাকে । জেলের শীর্ষ আধিকারিকরা তাকে দুবার করে দেখছেন । ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় নজরদারি ছাড়াও দুজন করে তিন শিফটে কারারক্ষী থাকছেন তাঁর সঙ্গে। পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাই এখন সারা দেশের সামনে একজন ধর্ষক ও খুনি ।সোমবার যাবজ্জীবন না ফাঁসি কেন সাজার কথা শেনানা বিচারক সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
আর জি কর মামলা-র ঘটনা প্রবাহ এক নজরে
৯ ই আগষ্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার
১০ ই আগষ্ট ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাই
১৩ ই আগষ্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
১৪ ই আগষ্ট বিচারের দাবিতে রাত দখল
১৮ ই আগষ্ট সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রনোদিত মামলা
২ রা সেপ্টেম্বর জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার অভিযান
১০ ই সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে জুনিয়ার ডাক্তাররা
১১ ই সেপ্টেম্বর জুনিয়র ডাক্তারদের নবান্নে বৈঠকে আমন্ত্রন
১৪ ই সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার আর জি কর মেডিক্যালের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মন্ডল
১৬ ই সেপ্টম্বর সরানো হয় কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে
৭ ই অক্টোবর সঞ্জয় রাইয়ের নাম উল্লেখ করে সিবিআইয়ের চার্জশিট
৪ ঠা নভেম্বর সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
১১ ই নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু
অবশেষে রায় দান
১৮ ই জানুয়ারি ২০২৫ সঞ্জয় রাই কে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত
২০ই জানুয়ারি ২০২৫ সোমবার হবে সাজা ঘোষণা , সাজা ঘোষণা করবেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস