নিজস্ব সংবাদদাতা , মানিকচক , ০৯ জানুয়ারী : মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের পায়ে শিকল, ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা প্রশাসনের। তার বাড়িতে ছুটে যান মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল সহ প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসনিক স্তরে দ্রুততার সঙ্গে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের ব্যবস্থা করা হলো পর্যাপ্ত চিকিৎসার। মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আপাতত হবে চিকিৎসা। উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা করা হবে সলাবতগঞ্জ গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের এমনটাই জানিয়েছেন সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল।
উল্লেখ্য, মালদার মানিকচক ব্লকের চৌকি মিরদাতপুর অঞ্চলের সালাবাদগঞ্জের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের নাম শেখ কাশেদ। তার বাবা শেখ বুদ্দিন। ছেলেকে পায়ে শিকলে বেঁধে রেখেছেন পরিবার। শিকল-বাঁধা যুবকের এমনই দৃশ্য সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে থেকে একটু একটু করে মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকে কাশেদ। প্রথম দিকে সমস্যাটা তেমন বোঝা যেত না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সঙ্গিন হয়ে উঠেছে। আত্মীয় থেকে গ্রামবাসী যাকে হাতের সামনে পাচ্ছে তাকেই মারছে আঘাত করছে কাশেদ। তাই পায়ে শিকল দিয়ে প্রায় দুই বছর ধরে রেখেছে পরিজনেরা। বাবা শেখ বুদ্দিন বললেন, আমি দিন মজুর। কাশেদও আগে কাজ করত। তবে এখন আর পারে না। ছোট ছেলে শেখ বাহাদুর ভিনরাজ্যে কাজ করে। তার আয়ে কোনও ক্রমে আমাদের দিন কাটে। তাতে যতটা চিকিৎসা সম্ভব ততটা করিয়েছি। এখন খাবার টাকা জুটছে না, ছেলের চিকিৎসা করাব কী ভাবে ? সম্প্রতি শিকল-বাঁধা যুবকের করুণ দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই শনিবার তার বাড়িতে ছুটে যান মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তারাও। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ব্যক্তিগতভাবে কিছু আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল। গ্রামবাসীদের সকলকে আশ্বস্ত করেন এই যুবকের চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ে। এ প্রসঙ্গে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল জানান, কাশেদ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। উন্নতমানের চিকিৎসা হয় তার জন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় চিকিৎসা সেরকম সম্ভব হয়নি তবে প্রশাসনের তরফ থেকে সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিবারের খাবার জোগান থেকে শুরু করে ওই যুবকের চিকিৎসার সর্বত্র ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আজই চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসা করা হবে এই যুবকের।