হরিশ্চন্দ্রপুর, ২ আগস্ট : চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়ির গাছের শিকলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে বেঁধে রেখেছে বাড়ির লোক। এমনই দুরাবস্থায় দিন কাটছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের একবালপুর গ্রামের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক সেলিম আকতারের।
জরাজীর্ণ মাটির বাড়ির সামনে একটা গাছে শেকলের সঙ্গে বাঁধা সে দিনের পর দিন। বৃষ্টি হলে মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলে ঘরের দাওয়ায়,নচেৎ গাছের নীচেই তার ঠিকানা। শেকল শরীরে চেপে বসে ক্রমশ: তৈরি হয়েছে দগদগে ঘা। ধুলো ময়লা, মাছি বিষাক্ত করে তুলেছে সেই ঘা। সেলিমের দাদা হারুন রশীদ এবং মা লাইলি বিবিও মানসিক ভারসাম্যহীন। ঘর ছাড়া তাঁরা। গ্রামের লোকজন কখনো তাঁদের দেখতে পান কখনো পান না। ছোটো ভাই আসিফ সুস্থ। বাবা জাকির হোসেন আর ঠাকুর্দা আব্দুল হক দিনমজুরির কাজের আয় দিয়েই চলে সংসার। করোনা আবহে সেই রোজগারও প্রায় নেই বললেই চলে। রেশন কার্ড শুধু পরিবারের একজনের নামেই রয়েছে। সেই রেশন তুলে এনে ভাগাভাগি করে চলে সংসার।২০১৭ সালে বন্যায় সর্বস্বান্ত হলেও মেলেনি সরকারি সাহায্য। আবাস যোজনায় নাম তোলার আবেদন করতে গেলেও গুরুত্ব দেননি পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রশাসনের আধিকারিকরা।সেলিমকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসক থেকে শুরু করে ওঝা গুণিন বাদ পড়েনি কিছুই। তৈরি হয়নি যুবকের প্রতিবন্ধী শংসাপত্রও। এমনকী সরকারী মানসিক হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্যে পঞ্চায়েত, ব্লক, জেলা পরিষদ সদস্য, বিধায়কের কাছে বারবার তদ্বির করেও কোন সাহায্য মেলেনি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছে তার বাবা ও ঠাকুরদা।ফলে সেলিমের চিকিৎসার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সহৃদয় সংস্থা কিংবা ব্যক্তির কাছে আবেদন করেছে তার বাবা ও ঠাকুরদা।অন্যদিকে অসহায় ওই পরিবারটিকে সবরকমভাবে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান।