ডিজিটাল ডেস্কঃ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার পর পাল্টা কূটনৈতিক ও কড়া জলের নীতির পথে হাঁটল নয়াদিল্লি। পাকিস্তানকে আর এক ফোঁটা জলও না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করল ভারত। ভারতের এই পদক্ষেপকে কার্যত যুদ্ধের প্রথম ধাপ বলে দাবি করল পাকিস্তান। সেই ইঙ্গিতই দিলেন পাক শক্তিমন্ত্রী আওয়াইস লেঘারি।
সম্প্রতি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে দেওয়া এক বার্তায় লেঘারি বলেন, “সিন্ধু নদ আমাদের অস্তিত্বের অংশ। এর প্রতিটি বিন্দু জলের ওপর পাকিস্তানের অধিকার আছে। ভারত একতরফাভাবে চুক্তি বাতিল করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। এটি কেবল বেআইনি নয়, বরং যুদ্ধ ঘোষণা করার সমতুল।”
আরও পড়ুনঃ ‘হিন্দু বলে মেরেছে’ মন্তব্যে শুভেন্দুর পাশে শহিদ স্ত্রী, পাল্টা প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ
ভারতের পক্ষ থেকে বুধবারই স্পষ্ট জানানো হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করছে দিল্লি। ভারতীয় বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি এক বিবৃতিতে জানান, “সীমান্ত জঙ্গি কার্যকলাপ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সিন্ধু চুক্তি স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি আটারি সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে, এবং পাকিস্তানের নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের চলে যেতে বলা হয়েছে।”
এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ইসলামাবাদ থেকে আসতে শুরু করে তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এখনও প্রকাশ্যে না এলেও, তাঁর দফতরের এক প্রবীণ উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ বলেন, “দুই দেশের মধ্যে সিন্ধু জলচুক্তি ছিল শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার প্রতীক। সেটি বাতিল করা মানেই যুদ্ধ ডাকা।”
পাক বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার অবশ্য জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ভারত কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই চুক্তি বাতিল করেছে, যা কূটনৈতিক সৌজন্যের পরিপন্থী।”
বিশ্লেষকদের মতে, সিন্ধু চুক্তির মতো একটি আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত জলসম্পদ ভাগাভাগির চুক্তি বাতিল করে ভারত কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। তবে এই চুক্তি বাতিল ঘিরে ভারত-পাক সম্পর্কের মধ্যে নতুন উত্তেজনার সূচনা হল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।