হরিশচন্দ্রপুর, ১৪ জুন : মালদা জেলার আমের খ্যাতি গোটা ভারতজুড়েই। মালদা জেলায় উৎপাদিত আম রপ্তানি হয় গোটা দেশজুড়েই।জেলায় উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির আমের মধ্যে বিখ্যাত হরিশচন্দ্রপুরের কুমারখা আম। জেলায় একমাত্র হরিশচন্দ্রপুরেই এই প্রজাতির আমের চাষ করা হয়ে থাকে।
স্বাধীনোত্তর পূর্ব ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের খুশী করতে এলাকার জমিদারদের হাত ধরেই এই আম চাষ শুরু হয়। উত্তরপ্রদেশের বিশেষ আমের সঙ্গে স্থানীয় প্রজাতির আমের সংমিশ্রণ বানিয়ে এই আম উৎপন্ন করা হয়। ফলে একমাত্র হরিশচন্দ্রপুরেই এই আমের চাষ করা হয়। হরিশ্চন্দ্রপুরের জমিদার পরিবার মিশ্রবাড়ির উত্তরসূরী চিরঞ্জিত মিশ্র এই আমের ইতিহাস নিয়ে বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়া এই আম কোথাও পাওয়া যায় না। সেই সময়ের জমিদাররা উত্তর প্রদেশ এবং স্থানীয় আমের সংমিশ্রণ করে এই আম চাষ করেছিল। পূর্বসূরীদের থেকে জানা যায় ব্রিটিশ গভর্নরদের খুশি করতে এই আম দেওয়া হতো। ফলে কুমারখা আমের এক বিশেষ কদর রয়েছে। তাদের পরিবারের বহু সদস্য দেশ এবং বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যাদের প্রত্যেক বছর এই আম পাঠানো হয়। কিন্তু শিলাবৃষ্টি, ইয়াস পরবর্তী দূর্যোগ, অসময়ের বৃষ্টিতে এবছর এই আমের ফলন কমে গিয়েছে ব্যাপকহারে। প্রতি বছর প্রায় ৪০০ থেকে সাড়ে ৪৫০ টন আম উৎপন্ন হয়। সেখানে এ বছর ৭০-৮০ টন আম হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে এলাকার আমচাষীরা। চাষীরা জানিয়েছেন, অন্য বারের থেকে এই আমের ফলন খুব কম। বাইরে রপ্তানি তো দূরের কথা, এলাকার মানুষ ঠিকভাবে এই আম পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। আশানুরুপ আম উৎপন্ন না হওয়ায় এবছর কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষীরা। কুমারখা আম চাষী অরবিন্দ দাস বলেন, দশ পনেরো বছর ধরে এই আম চাষ করে আসছেন। তবে অন্য বারের থেকে এবার ফলন খুব কম। বাইরে রপ্তানি তো দূরের কথা, এলাকার মানুষ ঠিকভাবে পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।অন্যদিকে আম চাষীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তজমুল হোসেন।