নিউজ ডেস্ক , ১৭ ডিসেম্বর : কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক বিরোধী কৃষি আইন বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলন জারি রয়েছে কৃষকদের। আইন বাতিল না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকরা। যদিও আইন প্রত্যাহার না করার কথাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এই চাপানউতোর পরিস্থিতিতে কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ফের প্রাণ গেল চাষির।
প্রকাশ্য রাস্তায় নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করলেন হরিয়ানা নিবাসী শিখ ধর্মগুরু বাবা রাম সিংহ। এ নিয়ে বুধবার উত্তাল হয়ে ওঠে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সিংঘু ধর্মগুরু রাম সিংহ হরিয়ানার এবং পাঞ্জাবে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। সন্ত বাবা রাম সিংহ হরিয়ানার করনালের বাসিন্দা। অসংখ্য ভক্ত রয়েছেন তাঁর। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বহু শিখ সংস্থার কার্যনির্বাহক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কৃষি আন্দোলনের আখড়া তথা উত্তপ্ত সিংঘু সীমান্তের কাছেই কুন্ডলী নামক জায়গায় একটি লাইসেন্সধারী বন্দুক থেকে নিজেকে গুলি করেন এই ধর্মগুরু।
সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, “কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা আর সরকারের অত্যাচার আর চোখে দেখা যাচ্ছে না। অনেকদিন ধরে কৃষক-বন্ধুদের কষ্ট দেখছি। রাস্তায় দিন কাটছে তাদের। নিজেদের অধিকারের জন্য জীবনপাত করে দিচ্ছে। কিন্তু এটা দেখে আরও খারাপ লাগছে যে, এর পরও সরকার তাদের সুবিচার পাইয়ে দিচ্ছে না। নিপীড়িত হয়ে চলেছে তারা। এটা অপরাধ। একপক্ষ অত্যাচার করে পাপ করছে আর অন্য পক্ষ তা সহ্য করছে।” আরও আক্ষেপ ছিল রাম সিংয়ের। তিনি লিখেছেন, “কৃষকদের অধিকার পাইয়ে দিতে কেউই সরকারের বিরুদ্ধে হাঁটেনি। অনেকে পুরস্কার ফেরানোর কথা বললেও, সরকারের জুলুম থেকে এখনও নিস্তার মেলেনি। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তাঁর কথায়, ‘আমার এই পদক্ষেপ সরকারের সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে। কৃষকদের জন্য লড়াইয়ের পক্ষে।”
ধর্মগুরুর আত্মহত্যার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিরোমণি আকালি দলের নেতা সুখবীর সিং বাদল। এমনিতেই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এনডিএ ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে আকালি দল। মন্ত্রীত্ব ছেড়েছেন সুখবীরের পুত্রবধূ হসরিমারত কৌর। সুখবীর নিজেও পদ্মভূষণ সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বাইশ দিনে পড়ল কৃষকদের বিক্ষোভ। সরকারের সাথে আলোচনায় বরফ গলেনি। কৃষকদের দাবী, আইন বাতিল করতে হবে। সরকার সংশোধনের প্রস্তাব দিলেও তা মানেনি কৃষক সংগঠনগুলি।