নিজস্ব সংবাদদাতা , ইটাহার , ১৩ নভেম্বর : জমিদারি নিয়ম-নীতি মেনে শ্যামা মায়ের পুজোর আয়োজন করে চলেছেন ইটাহারের পোরষা এলাকায় ঠাকুরানীর ঝুমুর কালির বর্তমান ঘোষ বংশধরেরা। উল্লেখ্য তৎকালীন দুর্গাপুরের গোপালপুরের জমিদার ভূপাল চন্দ্র রায়চৌধুরীর একটি হাতি হারিয়ে যায়। জমিদার অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেই হাতির খোঁজ পাননি।
অবশেষে ঝুমুর কালী মায়ের স্বপ্নাদেশে জমিদার জানতে পারেন ইটাহারের পোরষা এলাকার জঙ্গলে রয়েছে তার হাতিটি। ঘোষ পরিবারের পুজোর আয়োজক কার্তিক ঘোষ বলেন, গোপালপুরের জমিদারের হাতি হারিয়ে যায়। যার ফলে ঝুমুর কালী মায়ের স্বপ্নাদেশে জমিদার পোরষা এলাকায় তার হাতি খুঁজে পান। কিন্তু জমিদার তার হাতি নিয়ে গেলেও ঝুমুর কালী মায়ের কোন আরাধনা করেননি। ফলে আবারো পরে জমিদার মায়ের স্বপ্নাদেশে পোরশা এলাকার জঙ্গলে আসলে ঠাকুরানী ঝুমুর মায়ের পাথরের ছোট একটি মূর্তি খুঁজে পান। তখন থেকেই পোরষা এলাকার জঙ্গলে মায়ের পুজোর সূচনা করেন জমিদার ভূপাল চন্দ্র রায়। পাশাপাশি মায়ের নামে কিছু ভিটা জমিসহ ছোট একটি পুকুর দান করেন তিনি। তবে জমিদার পূজার সূচনা করলেও পোরশা এলাকার মঙ্গল ঘোষকে এই পুজোর দায়িত্ব দেন। তখন থেকে মঙ্গল ঘোষের বংশধরেরা এই পুজো করে আসছেন। তবে মন্দিরের কোন চালা নেই। মায়ের চালার ওপরে থাকা পাথরের মূর্তিতে মায়ের পুজোর আয়োজন করা হয়। মন্দির এর পেছনে থাকা পুকুর থেকে জল ভরে আনতে হয় পুজোর ঘটে।
ইটাহার থানার বড়বাবু পুজোর ডালা মাথায় নিয়ে ঢাক বাজিয়ে আসেন মন্দির প্রাঙ্গণে। তবেই শুরু হয় ঝুমুর কালী মায়ের পুজো। এমনকি ঝুমুর মায়ের পুজো শুরু না হলে ইটাহারে কোন কালীপুজো শুরু হয় না। জমিদারি আমল থেকেই তা হয়ে আসছে। পূজা উপলক্ষে কোনরকম চাঁদা নেওয়া হয় না সাধারন মানুষদের কাছ থেকে। পূজোর সমস্ত ব্যয়ভার বহন করেন ঘোষ বংশধরেরা। সেই নিয়মনীতি মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়, তবে এবারের পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। সেরকম আলোকসজ্জা বা মণ্ডপসজ্জা না থাকলেও করোনা আবহে সরকারি নিয়ম মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। মন্দির চত্বরে মাক্স এবং স্যানিটাইজার এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচিরও পরিকল্পনা রয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের।