ডাঃ দেবব্রত রায় , ২১ অক্টোবর : এবারের আসন্ন পুজো নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে আমরা অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি।মনের ভেতরে কোথায় যেন মরতে মরতেও বেঁচে ফেরার অনুভূতি টের পাওয়া যাচ্ছে ! কিন্তু সত্যিই কি পুরোপুরি নিরাপদ জায়গায় এসে গেলাম আমরা? সেটা হ’লে ভালই হ’ত।
কিন্তু নাহ্ । অতটা আশাবাদী কিন্তু হওয়া যাচ্ছে না। আসলে ঘটনা পরম্পরা সেই স্বস্তিটুকু পেতে দিচ্ছে না আমাদের। এই তো এক বছর আগের ঘটনা। পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে কলকাতার সরোবরে ছট্ পুজোতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আদালত । কাউকে ঠেকানো যায়নি। সুতরাং এবারের আদালতের রায় মানতে এবং মানাতে মানুষ এবং প্রশাসন কতটা আন্তরিক হবে সে আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে নিঃসেন্দেহে আশায় বুক বেঁধে থাকছি আমরা, সাধারণ ভুক্তভোগী জনগণ। এতো গেল ভবিষ্যতের কথা। বর্তমান চিত্রও কি খুব একটা স্বস্তি দিচ্ছে আমাদের?
একেবারেই না। সাম্প্রতিক একটি খবরের দিকে নজর দেওয়া যাক। খবরে প্রকাশ রায়গঞ্জের জনবহুল লাইনবাজার চত্বরে বাজারে আসা এবং পথচলতি মাস্কবিহীন লোকজনদের বাধ্যতামূলক করোনা টেস্ট করানোতে ৫০ জনের মধ্যে ২ জনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এইসব মানুষজন নিজেদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারনে অজান্তেই ইতিমধ্যে অনেকের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়ে বসে আছেন। এবং এই সংক্রমণ গুনোত্তর প্রগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণের মধ্যে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এটি অত্যন্ত শুভ উদ্যোগ সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সময়ে শপিং কমপ্লেক্সে কি ঘটছে সেদিকে নজর নেই কারোরই। সেখানে ঢুকবার মুখে স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্রিনিং সবই হচ্ছে। প্রশ্ন হ’ল করোনা অতিমারীর এই পর্যায়ে এই নামমাত্র স্ক্রিনিং কতটা কার্যকরী । খোঁজ নিয়ে জানা গেল এ পর্যন্ত কাউকেই এই স্ক্রিনিং এর জালে আটকে পড়তে হয়নি।
আবার মাস্ক না থাকলেও অবাধে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছেন অনেকেই। আবার যাঁদেরও বা মাস্ক থাকছে তাঁদেরও অনেকেই ভেতরে ঢুকে মাস্ক খুলে পকেটে রাখছেন বা গলা/ থুতনির নিচে ঝুলিয়ে রাখছেন নির্দ্বিধায়। কেউ দেখছেনও না কেউ কিছুই বলছেনও না। এই ভাবেই ঢ্যাশাঢেশি আর ঠেসাঠেসি করে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে লেনদেন করছেন। করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর একেবারে আদর্শ পরিবেশ। হয়তো ব্যবসায়িক স্বার্থেই মল কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কিন্তু প্রশাসন চুপচাপ চোখ বুজে থাকছে কেন? প্যান্ডেলে ভয়ানক জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের কাছে এ কাজ তো নস্যি। ভয়টা সেখানেই । এই পূজার বাজারে সর্বনাশের অষ্ট কলা পূর্ণ হয়েই গেছে । সমস্ত কিছু ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে ষোলো কলা পূর্ণ হতে সময় লাগবে না।