নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ০৫ ডিসেম্বর : পরনে আটপৌরে শাড়ি, আর সেই শাড়ি পড়েই গ্রামগঞ্জের রাস্তা, মাঠ,ঘাটে জিমনাস্টিকের নানান কসরত করে চলেছে এক কিশোরী। স্যোশাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হতেই শিরোনামে চলে এসেছে রায়গঞ্জের আব্দুলঘাটার বাসিন্দা মিলি সরকার। প্রশংসা কুড়িয়েছে নেটিজেনদের। সংসারে অভাব থাকলেও আগামী দিনে জিমন্যাস্টিকসের কলাকে রপ্ত করে প্রতিষ্ঠিত নৃত্যশিল্পী হতে চায় সে।
উল্লেখ্য সুস্থ শরীর ও মনের জন্য যোগ ব্যায়াম, জিমনাস্টিকের কোনো বিকল্প নেই। রায়গঞ্জের আব্দুল ঘাটার বাসিন্দা মিলি সরকার এই ব্যায়ামের সঙ্গে নৃত্যকলাকে যোগ করে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। কিন্তু নিম্নবিত্ত পরিবারে এইধরনের শখ পূরণ খুব সোজা নয়। কিন্তু হাল ছাড়ে মিলি। পরিবারের ছোটো মেয়ে মিলি পাঁচ বছর আগে থেকে শিলিগুড়ির একটি সংস্থায় ড্যান্স শেখা শুরু করে। এছাড়াও বাড়িতেই নেয় যোগা প্রশিক্ষন। করোনা আবহে লকডাউনের কারনে শিলিগুড়িতে ড্যান্স প্রশিক্ষনে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। ২০১৮ সালে মহারাস্ট্রে সর্বভারতীয় যোগা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ান হয়ে স্বর্ন পাদক লাভ করে সে। তবে সর্বভারতীয় সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তাঁর বাবাকে ৫০ হাজার টাকা ঋন নিতে হয়েছিল।
লকডাউনে ডান্স, যোগা প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকায় সোশ্যাল মিডিয়াতেই সময় কাটতো তাঁর। আর সেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই মিলি সরকার জানতে পারেন ট্রেন্ডিং কিছু করে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করলে তার চাহিদা বাড়ে। একথা মাথায় রেখে শাড়ি পড়েই একের পর এক জিমন্যাষ্টিকের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে মিলি। অল্পদিনেই তার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে প্রশংসাও করেন মিলির নিপুনতাকে। মিলি জানিয়েছে, জিমন্যাষ্টিক ভাল ভাবে শিখলে কোন সমস্যাই সমস্যা নয়। শাড়ি পড়েও ব্যায়াম,জিমনাস্টিক করা যায়। জিমনাস্টিক ও ডান্সকে সংযুক্ত করে আগামীতে নতুন কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে। মেয়ের সাফল্যে খুশী বাবা নকুল সরকার। নকুলবাবু জানান, গরীব মানুষের কাছে এসব বিলাসিতা মাত্র। অনেক কষ্ট করে মেয়ে এবিষয়ে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। তার ছবি দেশ, বিদেশে ছড়িয়ে পড়ায় আমি খুব খুশী। কষ্ট হলেও মেয়ের স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করবো।