নিউজ ডেস্ক : শীতকালে গরম পেয়ালায় কফির স্বর্গীয় স্বাদ উপেক্ষা করতে পারে এমন লোকের সংখ্যা মেলা দুষ্কর। শুধু শীতকালই বা বলি কেন! মনের মানুষটির সঙ্গে প্রথম দেখা কিম্বা কলেজ ছুট বন্ধুরা মিলে কফি শপে গিয়ে কফির সুঘ্রান নেওয়ার মতো স্বর্গীয় অনুভূতি আর কীই বা হতে পারে? তাহলে চলুন অসম্ভব জনপ্রিয় এই পাণীয়র বিষয়ে একটু ইতিহাসের পুরানো পথে ফিরে যাই। একটা সময় ক্যাথলিক খ্রীষ্টানরা কফির তীব্র বিরোধী ছিলেন। তারা একে বলতেন “ড্রিংক অফ দ্য ডেভিল” অর্থাৎ শয়তানের পানীয়।
কফি আবিষ্কারের প্রথম কৃতিত্ব যদি দিতে হয় তাহলে তা দিতেই হবে ইথিওপিয়ার এক মেষপালককে।
নবম শতকে ইথিওপিয়ায় বাস করতো খালদি নামের এক পশুপালক। একদিন গৃহপালিত পশুগুলিকে নিয়ে মাঠে যাবার পর খালদির মনে হলো ছাগলগুলির দুরন্তপনা একটু বেড়ে গেছে। অনুসন্ধান করতে গিয়ে সে খেয়াল করে, লাল জামের মতো একটি ফল খাচ্ছে তার ছাগলেরা। ধর্মপ্রাণ খালদি সাথে সাথে সেই ফলটি নিয়ে হাজির হয় স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে। ইমাম শয়তানের প্রলোভন ভেবে ফলগুলি আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কিছুক্ষণ পরেই আসতে লাগলো দারুণ সুঘ্রাণ। ইমামের ছাত্ররা চিন্তা করে দেখলেন, সিদ্ধ করে খেলে কেমন হয়। রোস্ট করা বীজগুলোকে নিয়ে এক কড়াই গরম জলে সিদ্ধ করা হলো। এভাবেই তৈরি হয় পৃথিবীর প্রথম কাপ কফি।
অন্য একটি তথ্য অনুযায়ী , ইয়েমেনের এক সুফি সাধকই কফির আবিষ্কর্তা। তার নাম ঘোতুল আব্দুল নুরুদ্দীন আবুল আল-হাসান আল-সাদিলি। ইথিওপিয়ায় বেড়াতে একটি পাখিকে লাল রঙের একটি ফল খেতে দেখে নিজেও চেখে দেখেন সেটাকে।খাওয়ার পরেই চনমনে হয়ে ওঠে তার শরীর ও মন। এভাবেই কফির কথা জনমানসে ছড়িয়ে পড়ে।
জানেন, বিভিন্ন দেশে ‘কোপি লুয়াক’ কফি খুব বিখ্যাত। এটি সিভেট নামক একধরণের বিড়ালের বিষ্ঠা থেকে তৈরি হয়। কফির বীজগুলি বিড়ালের পরিপাকতন্ত্র দিয়ে যাওয়ার সময় গেঁজে যায়। পরে সেগুলি বিক্রি করা হয়। এই কফির ৫০০ গ্রামের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে থাইল্যান্ডে হাতিদের বিষ্ঠা থেকে তৈরী হচ্ছে ব্ল্যাক আইভরি কফি। এটিও অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে কফি প্রেমীদের মধ্যে।