নিজস্ব সংবাদদাতা , চাঁচল , ২৯ জানুয়ারী : ছোটবেলায় আর পাঁচটা সুস্থ-স্বাভাবিক শিশুর মতই জন্ম নেয় সে। কিন্তু কিছুদিন পরেই এক দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক বোধ ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেলে চাচোলের জয়বাংলা এলাকার বাসিন্দা রিচা।এগারো বছর আগে এলাকার বাসিন্দা আজিজুল হক ও রুলি বেগমের যমজ সন্তান হয়।
কিন্তু কয়েকমাস যেতেই না যেতেই দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয় সে। স্বাভাবিক বোধ প্রকাশেও সক্ষম নয় সে। কখনো অজান্তেই নিজেকেই সে আঘাত করতে থাকে। রক্তাক্ত হয়ে ওঠে নিজেরই শরীর।তার বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি আজিজুল হক সাধ্যমত বিভিন্ন জায়গায় চিকিতসার চেষ্টা করলেও কোন লাভ হয়নি। রোগ নির্ণয় না হওয়ায় মেলেনি কোন প্রতিবন্ধী শংসাপত্রও। ফলে সরকারি কোন ভাতারও সুযোগ পায় না রিচা। তার চিকিৎসার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন থেকে ব্লক প্রশাসনকে বারংবার জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। রিচার মা রুলি বেগম জানিয়েছেন, দশবছর আগে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। দুজনেই সুস্থ ছিল। কিন্তু একজন কয়েকমাস যেতে না যেতেই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেও কোন উপকার হয়নি। কোন চিকিৎসকই তার রোগ নির্ণয় করতে পারেনি।অর্থের অভাবে তার চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। চিকিৎসা ছাড়া সেভাবেই ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে রিচা। তার সমস্যাই হল সে ক্রমাগত নিজের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে যায়। ফলে আঘাত লেগে শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। আধার কার্ড করা সম্ভব না হওয়ায় মেলেনি প্রতিবন্ধী শংসাপত্র। বিভিন্ন জায়গায় দরবার করা হলেও কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তার।
তাদের এক আত্মীয় মাজের শেখ জানান, হাসপাতাল তার রোগ নির্নয় করতে পারছে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না হওয়ায় আরো খারাপ হচ্ছে তার পরিস্থিতি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান এ বিষয়ে জানলেও কোন উদ্যোগই তারা নিচ্ছেন না। এমনকী তার প্রতিবন্ধী শংসাপত্র বানিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। ফলে ওই পরিবার সমস্যায় পড়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাজের হক। ফলে নিজের সন্তানের সুস্থ হয়ে ওঠা নিয়ে ক্রমশই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা। রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় পৌছে জনগণের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হলেও রিচার সহায়তায় প্রশাসন কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রিচার পরিজনেরা। তার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের কাছে সহায়তার আর্জি জানিয়েছেন তার মা রুলি বেগম ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।