নিজস্ব সংবাদদাতা , হরিশ্চন্দ্রপুর , ১৬ অক্টোবর : হরিশ্চন্দ্রপুরের দাপুটে জমিদার হরিমোহন মিশ্রের চরিত্র অবলম্বনে একসময় সাহিত্যিক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় রচনা করেছিলেন কালজয়ী উপন্যাস দ্বৈরথ। যদিও উপন্যাসে হরিমোহন মিশ্রের চরিত্রের নাম দেওয়া হয় উগ্রমোহন সিং।
সে সময় তার জমিদারীর মধ্যে ভালুকা ছিল প্রধান অংশ।প্রায় একশ সাতাশ বছর আগে ইংরেজ শাসনকালে ভালুকার ফুলহর নদীর তীরে প্রায় ২০০ বিঘা জমির উপর তৈরি করেছিলেন দুর্গা মন্দির। সাতদিন ধরে দুর্গা পূজাকে ঘিরে চলত উৎসব অনুষ্ঠান।আমন্ত্রিত হতেন ইংরেজ সাহেবরাও। কলকাতা থেকে আনা হতো যাত্রা পার্টি। হাতির পিঠে চড়ে জমিদার পরিবারের সদস্যরা মন্দিরে আসতেন পুজো দিতে। কিন্তু ১৯৬৪ সালের ফুলহরের ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় জমিদার হরিমোহন মিশ্রের তৈরি করা দুর্গা মন্দির। এরপরেই ভালুকা বাজারে এই পুজো স্থানান্তরিত হয়ে যায়। ১৯৫৩ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরে জমিদারী স্টেট থেকে পুজো করা হত। কিন্তু বর্তমানে স্টেট থেকে কোন অর্থ আসে না এই পুজোয়। যদিও মিশ্র বংশের আদি পুজো হয় পিপলার বড় চালিতে।ফলে ভালুকা বাজার এলাকায় হরিমোহন মিশ্রের প্রতিষ্ঠা করা দূর্গাপুজো আক্ষরিক অর্থেই সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। এলাকাবাসীদের সম্মিলিত উদ্যোগে এই পুজো আয়োজিত হয়। তবে আজো প্রাচীন রীতি মেনে সাবেকি প্রতিমা পূজিতা হন এখানে। এবারে এই পুজোর ১২৭তম বর্ষ। সারা ভালুকা বাজার এলাকার লোকজন এই পুজোয় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।অষ্টমীর দিন এলাকার সমস্ত মহিলা একত্রিত হয়ে মায়ের পূজো দেন। নবমীতে হয় কুমড়ো বলি। প্রাচীন রীতি মেনে এখনো দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্রবিলি ও নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।