নিউজ ডেস্ক , ০৩ ফেব্রুয়ারি : কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালা ওরফে অনুপ মাঝির আবেদন খারিজ কলকাতা হাইকোর্টে। তার বিরুদ্ধে সিবিআই-এর তরফে দায়ের হওয়া এফআইআর তুলে নেওয়ার জন্যে আবেদন জানিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় লালা। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই লালার আইনজীবী রাজ্জাক সওয়াল-জবাবে দাবি করেন, নিছক অপরাধমূলক কাজকর্মে যুক্ত বলে মনে করলেই, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায় না। এক্ষেত্রে তদন্ত চালিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনের সম্মতি প্রয়োজন। সিবিআইয়ের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর পালটা বলেন, “কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী রেলের এলাকায় যদি কোনও অপরাধমূলক কাজকর্ম সংগঠিত হয়, সেক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত করতে পারে। ইসিএলের এলাকা থেকে বেআইনি কয়লা উত্তোলন এবং কয়লা পাচারের অভিযোগ রয়েছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।” কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, কয়লা কাণ্ডে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে সিবিআই। তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। রেলওয়ে আইন অনুযায়ী রেলের জমির মধ্যে নির্বিঘ্নে তদন্ত করতে পারবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে, যে জায়গা রেলের অধীনে নয়, সেখানে তল্লাশি করতে গেলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে।
রাজ্যের অধিনস্ত এলাকায় থাকা কোনও ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে, তাঁকে সমন পাঠাতে পারবে সিবিআই। তলবের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। শুধু তল্লাশি অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যুগ্মভাবে অপারেশন চালাতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর ২০২০ কয়লা পাচারকারী অনুপ মাঝির ঘনিষ্ট ছয় জন কয়লা ব্যবসায়ীকে নোটিস পাঠিয়েছিল আয়কর দপ্তর। ওই ছয় কয়লা ব্যবসায়ীর অনুপ মাঝির ঘনিষ্ট সংযোগ সূত্র পাওয়ার পরই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠায় সিবিআই। কিন্তু লালা দেখা করেননি। জানা যায়, গোরু পাচার কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়লা ব্যবসায়ী অনুপ মাঝি ওরফে লালার সাথে তাঁর যোগসাজশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসিএল অঞ্চলে অবৈধ কয়লা খনন ও পাচারের মূল অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসূত্র করে তিনি এই বেআইনি চক্র চালাচ্ছিলেন। পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ভামুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লালা বেআইনি কয়লা পাচার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রিসোর্ট ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ।