নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ২৯ মে : করোনার কোপে উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প হল, কার্পেট শিল্প। বিদেশের বাজারে সমাদৃত জেলার তৈরি এই কার্পেট শিল্পীদের ঘরেই এখন পড়ে থাকছে উৎপাদিত সামগ্রী ।
করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের কারনে উৎপাদিত কার্পেট সামগ্রী একদিকে যেমন রপ্তানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে তেমনি স্থানীয় বাজারেও ব্যাপক মন্দা দেখা দিয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে কারখানাগুলো। গত প্রায় দুবছর ধরে নেই কোনও রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলা সরকারি বা বেসরকারি হস্তশিল্প মেলাও। ফলে চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার স্বনামধন্য কার্পেট শিল্পীরা। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মালগাঁও গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা কার্পেট শিল্পের সাথে যুক্ত। এখানকার কার্পেট শিল্পীদের নিপুন হাতে কাজে সুদৃশ্য কার্পেট শুধু এই রাজ্য বা দেশ নয় বিদেশেও ব্যাপক কদর রয়েছে। আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশের নানা জায়গায় শোভা বর্ধন করে কালিয়াগঞ্জের মালগাঁওয়ের শিল্পীদের তৈরি কার্পেট। শুধু বিদেশই নয়, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদেও এখানকার তৈরি কার্পেটের ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়া চলা লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেশ ও বিদেশের বাজার। বন্ধ সরকারি বেসরকারি হস্তশিল্প মেলাও। এবছর করোনার ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউএ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়াতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাদের কার্পেট তৈরির কাজও। কার্পেট শিল্পী ও শ্রমিকেরা করোনার আতঙ্কে কেউই আর কাজে আসছেনা। ফলে একদিকে যেমন এই এলাকার প্রায় ছয় শতাধিক কার্পেট শিল্পী ও শ্রমিক কাজ হারিয়ে দিশাহীন হয়ে পড়েছে, অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছে তেমনই কার্পেট তৈরির কাঁচামালও পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। ফলে চরম ক্ষতির মুখে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মালগাঁওয়ের কার্পেট শিল্প। কার্পেট শিল্পী আবু তাহের বলেন, করোনা তাদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। কিভাবে যে এই শিল্পকে বাঁচানো যায় তার কোনও দিশা তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না। সরকারের কাছে বহুবার দরবার করেও কোনও ফল হয়নি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে জেলার ঐতিহ্যশালী কার্পেট শিল্পই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। অন্যদিকে, কার্পেট তৈরির কারিগর সামিম রিয়াজ বলেন, প্রায় দুবছর ধরে কাজ বন্ধ হয়ে আছে। করোনার কারনে রাজ্য ও দেশজুড়ে যে হস্তশিল্প মেলা হত তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর কার্পেট তৈরি বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে তাঁরা।