নিউজ ডেস্ক, ১৬ নভেম্বর : ভাইফোঁটা হিন্দু তথা বাঙালিদের একটি প্রাচীন সনাতনী উৎসব। এই উৎসবের পোষাকি নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উৎসব। মূলত কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালি হিন্দু পঞ্জিকা মতে, এই উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে উদযাপিত হয়ে থাকে।
মাঝে মধ্যে এটি শুক্লাক্ষের প্রথম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে। বাংলায় ভাইফোঁটা ও পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামে পরিচিত। সেখানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পাঁচ-দিনব্যাপী। দীপাবলি উৎসবের শেষদিনে হয়। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। কিন্তু কিভাবে শুরু হয়েছিল এই ভাইফোঁটা উৎসব? এনিয়ে সমাজে অনেক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। একবার নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে এসেছিলেন, তখন সুভদ্রা তাঁর ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলিত হয় বলে জানা যায়। এই উৎসবের আরও একটি দিক হল যম দ্বিতীয়া। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। তাই ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাঁদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে- “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা। যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়ে যম হল অমর।
আমার হাতে ফোঁটা নিয়ে আমার ভাই হোক অমর। এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে। বর্তমানে এই ভাইফোঁটা সর্বজনীন। বাঙালির প্রতিটি ঘরেই এই দিনটি পালিত হয়৷ ভাইদের আপ্যায়নে দিদিরা নানা পদ সহযোগে ভুড়িভোজের আয়োজন করেন। আবার দাদা বা ভাইয়েরাও ফোঁটা নিয়ে নানা উপহার সামগ্রী দিয়ে থাকেন। ভাই বোনের প্রাচীন এই সনাতনী উৎসব তাই আজও সমানভাবে গুরুত্ববহন করে চলেছে বাংলার রীতিনীতিতে।