মানিকচক , ১২ আগস্ট : বিগত কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টি। আর তাতেই জল বাড়তে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান নদীগুলোতে। নদীতে জল বাড়তে থাকায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এরফলে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন তারা। অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
বর্ষা আসতেই জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীতে। ইতিমধ্যেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে গঙ্গা নদী। এমনকী লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে গঙ্গা নদীতে। নদীর জল ক্রমাগত বাড়তে থাকায় মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে নদীর জল। ফলে বিপাকে পড়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষেরা। পায়ে হেঁটে যাতায়াতে যেমন সমস্যা হচ্ছে, ঠিক তেমনি যানবাহন নিয়ে চলাচল করতেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকার বাসিন্দারা। পাশাপাশি গঙ্গা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জোৎপাট্টা, রবিদাসপাড়া, রামনগর গ্রামের কয়েকশো পরিবার। জলের তলায় চলে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। এরফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানীয় জল এবং খাদ্যসামগ্রী না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন এলাকাবাসীরা। বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধের উঁচু জায়গায় আবার রাস্তার ওপর ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি পরিবারগুলি। অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা। জল যন্ত্রণায় ভুক্তভোগী বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে গোটা এলাকা গঙ্গার জলে ভাসছে। তবু কেউ ঘুরে তাকাতেও আসেনি এলাকাগুলিতে। পরিবারের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে কোথায় যাব কোথায় আশ্রয় নিব তা নিয়েই চরম দুর্দশা জলবন্দি পরিবারগুলির। প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। বহু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানের ত্রিপল এর নিচে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু তাদের দাবি ত্রাণ সামগ্রী কিছু এখন না দিলেও অন্ততপক্ষে প্রশাসনের উচিত শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার। কিন্তু দুর্ভাগ্য কোন কারোরই দেখা নেই। কোনরকম ত্রাণ সামগ্রীও পৌঁছায়নি এলাকায়। অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গার বিপদসীমা হল ২৪.৬৯ মিটার এবং চূড়ান্ত বিপদ সীমা হল ২৫.৩০ মিটার। কিন্তু বর্তমানে গঙ্গার জল জলস্তর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চূড়ান্ত বিপদসীমা ২৫.৩০ মিটার জলস্তর ছুঁয়ে ফেলেছে গঙ্গা। এই পরিস্থিতিতে লাল সর্তকতা জারি রয়েছে গঙ্গা নদীতে। কিন্তু জলবন্দি পরিবারগুলি চরম দুর্দশায় দিন গুজরান করছে। যদিও এবিষয়ে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মন্ডল জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মত দ্রুত সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে জলবন্দি পরিবারগুলিকে।