নিউজ ডেস্ক , ০৫ জানুয়ারী : দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৯ বছর পর অবশেষে গ্রেফতার করা হল বরানগরের সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার জুনিয়র মৃধা খুনের মূল অভিযুক্ত প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীকে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আটঘন্টা জেরার পরে অসঙ্গতি মেলায় সিবিআই-এর স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ প্রিয়ঙ্কাকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। যদিও গোয়েন্দারা জানান খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে আরও কয়েকজন।
কারণ খুনের দিন প্রিয়াঙ্কা টলিউডের বেশ কয়েকজন পরিচালক ও প্রযোজকদের সঙ্গে প্রায় দুশোবার ফোনে কথা বলেছেন। সেই কল রেকর্ডস রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। জুনিয়ারের ‘ফেসবুক ফ্রেন্ড’ ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। খুনের দিনও জুনিয়র ও প্রিয়াঙ্কার ১৪ বার ফোনে কথা হয়েছিল। জুনিয়রের বাবা সমরেশ মৃধা দাবি করেছিলেন, মোহনবাগানের প্রাক্তন কর্তা তথা ব্যবসায়ী বলরাম চৌধুরীর প্রাক্তন পুত্রবধূ প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী এবং টলিউডের প্রযোজক প্রতীক শর্মা সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। আর জুনিয়র সেই ত্রিকোণ প্রেমের জটিলতার জেরেই খুন হয়। তাঁদের পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতিও দিয়েছিল আদালত। সিআইডি তদন্তের পর জানিয়েছিল, জুনিয়র খুন হওয়ার রাতে ২০০ বার প্রতীক ও প্রিয়াঙ্কা ফোনে কথা বলেন। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, খুনের দিন প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে গিয়েছিলেন জুনিয়র। যদিও প্রতীকের দাবি, মুন তাঁকে ফোন করে জানায়, তাঁর এক বন্ধু মারা গিয়েছে। প্রতীক তাঁকে ফোনে স্বান্ত্বনা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ১২ জুলাই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপর খুন হয়েছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জুনিয়র মৃধা। রাস্তার ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে পুলিশের অনুমান ছিল, হিট এন্ড রান কেস। তবে পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দোকা যায় তাঁর মাথার পিছন দিকে বুলেট গেঁথে রয়েছে। এরপরই ঘটনার তদন্ত শুরু করে বরাহনগর থানার পুলিশ। ঘটনার পর দু-বছর অতিক্রান্ত হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারছিল না পুলিশ। ফলে থেমে যায় তদন্ত। এরপর জুনিয়রের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আদালত সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয়।
তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পরই উঠে আসে বিভিন্ন তথ্য। বিভিন্ন ফাঁকফোকর জোড়ার কাজ শুরু হয়। তারই ভিত্তিতে সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রিয়াঙ্কা চৌধুরিকে ডাকা হয় সিবিআই এর তরফে। সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
যদিও তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবী করেছেন প্রিয়াঙ্কা।