নিউজ ডেস্ক, ২০ আগস্ট : কাবুল থেকে পালিয়ে এলেও ফের মনের টানে আফগানিস্তানে পা রাখতেই তালিবানদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছিল এরাজ্যের কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ’-এর লেখিকা সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
গুলিতে তাকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল তালিবানরা। ঘটনা ২০১৩ সালে ঘটলেও পুনরায় তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ায় নৃশংস সেই ঘটনার স্মৃতি ফিরে এল মৃত সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে দিদিকে হারানোর বেদনা আজও নাড়া দেয় তাকে। সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আফগানিস্তানে যেতে বার বার নিষেধ করেছিলেন ভাই৷ কিন্তু কথা শোনেন নি সুস্মিতাদেবী। গোপালবাবু বলেন, ১৯৮৮ সালে আফগানিস্তানের বাসিন্দা কাবুলিওয়ালা জানবাজকে আমার দিদি বিয়ে করেছিলেন। জানবাজের হাত ধরে সুস্মিতা চলে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ি। কাবুল থেকে প্রায় ১৮ ঘণ্টার পথ গজনি এলাকা অতিক্রম করার পর শারনা শহরে অবস্থিত শ্বশুরবাড়ি। সেখানে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের একটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন দিদি। সেখানে থাকাকালীন তালিবানের উত্থান ও অত্যাচার চাক্ষুষ করেছিলেন সুস্মিতা। পরে অত্যাচারের দাপটে ১৯৯৫ সালে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে এলেও ধরা পড়ায় তাঁকে চলে যেতে হয় শ্বশুরবাড়ি। এরপর একদিন সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে বাড়ির পাঁচিলে সুড়ঙ্গ কেটে কোনও ভাবে পালিয়ে যান সুস্মিতা। ফের পড়েন তালিবানের মুখে। সেখান থেকে পালিয়ে কোনও রকমে দিল্লি পৌঁছে যান। কলকাতায় পৌঁছে তাঁর এই সব অভিজ্ঞতা নিয়েই লেখেন বই ‘কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ’। তাঁর এই অভিজ্ঞতা নিয়ে হিন্দি ছবিও হয়েছিল ‘এসকেপ ফ্রম তালিবান’। কিন্তু দেশে ফেরার পর সব ঠিকঠাকই চলছিল। ২০১৩ সালে ফের আফগানিস্তানে যাওয়ার ভূত চাপে দিদির মাথায়। বারবার নিষেধ করলেও শোনে নি কথা। উলটো বলছিল আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এখন আগের মত নেই। কিন্তু আফগানিস্তানে ফিরতেই কিছুদিনের মধ্যেই দিদিকে খুন করা হয়। ভাই গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরো অভিযোগ, আফগানিস্তান থেকে ফিরে দিদি যে-সব কথা লিখেছিলেন এবং সেই বৃত্তান্ত নিয়ে পরে যে-হেতু ছবি হয়েছিল, তার শোধ তুলতেই ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সুস্মিতাকে খুন করে তালিবান। এমনকি “দিদির দেহটাও দেশে আনতে পারিনি। তার আগেই ওরা সমাধিস্থ করে দেয়।