মধু বিক্রি করতে এসে আটকে যাযাবর পরিবারের শিশু, সমস্যায় পরিবার

মধু বিক্রি করতে এসে আটকে যাযাবর পরিবারের শিশু, সমস্যায় পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা , হেমতাবাদ , ২৮ অক্টোবর :   মধু সংগ্রহ করতে আসা যাযাবর পরিবারগুলির ১৩ জন শিশুকে আটক করলো পুলিশ।
জানা যায়, প্রতিবছর জীবিকার তাগিদে বেশ কয়েকটি পরিবার পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার থেকে রায়গঞ্জ ব্লকের ১৪ নং কমলাবাড়ি অঞ্চলে আসে এবং সেই গ্রামেই কয়েকমাস থেকে আশেপাশের এলাকা থেকে মধু সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে আবার বিহারে ফিরে যায়৷

এবছরও তার অন্যথা হয়নি। গত একমাস আগে বিহারের সমস্তিপুর জেলার প্রায় পঁচিশটি যাযাবর সম্প্রদায়ের পরিবার কমলাবাড়ির হাটের পাশে তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নেয়। তবে করোনা সংক্রমণের ভয়ে গ্রামবাসীরা তাদের গ্রামে আশ্রয় দিতে নারাজ, তাদের অন্যত্র চলে যাওয়ার দাবী জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু যাযাবর পরিবারগুলির ১৩ টি শিশু চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে হোমে আটকে থাকায় সমস্যায় পড়েছে এই যাযাবর পরিবার গুলি। অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ছিনতাই এর ঘটনার সাথে এই শিশুদের যোগসূত্র থাকায় গত ১৩ই অক্টোবর রায়গঞ্জ থানার পুলিশ তাদের আটক করে৷ তবে ১৩ জনের প্রত্যেকেই নাবালক-নাবালিকা ও শিশু হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জের বিভিন্ন হোমে রাখা হয়েছে। জানা যায়, এই যাযাবর দলের শিশুরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোবাইল, সাইকেল ও নানা সামগ্রী চুরি করতো, এরপরই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এদের আটক করে জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেয়। এরপর এদের শহরের বিভিন্ন বয়েজ ও গার্লস হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তবে বাচ্চাদের ওপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে যাযাবর নরেশ কুরেদি জানান, পুলিশ বিনা কারণে আমাদের বাচ্চাদের আটক করে রেখেছে। বিহারে বন্যা হওয়ায় আমরা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছি। সারাদিন বিভিন্ন গ্রামে মধু সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালাই। বাচ্চাগুলি শহরে গিয়েছিল পুলিশ সেখানেই তাদের আটক করে হোমে পাঠিয়ে দেয়। তাই ওদের ছেড়ে বিহারে ফিরতে পারছি না। ভোট দিতে পারবো কিনা তাও জানিনা।

১৪ নম্বর কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মানিক বর্মন জানান, প্রতি বছর এই যাযাবর পরিবারগুলি গ্রামে আসে ও মধু সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তবে এদের বাচ্চাদের কেন হোমে আটকে রাখা হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। হোমের ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলেছি। কারন বাচ্চাগুলি ছাড়া না পেলে তাদের পরিবার বিহারে ফিরতে পারছেন না৷ আর এদিকে করোনা সংক্রমণের ভয়ে গ্রামবাসীরা এদের গ্রামে থাকতে দিতে চাইছেন না৷ তাই সব মিলিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অসীম রায় বলেন, রায়গঞ্জ থানার পুলিশ ১৩ জনকে উদ্ধার করে গত ১৩ই অক্টোবর আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। তবে আটক হওয়া বাচ্চা গুলো শিশু, নাবালক ও নাবালিকা হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরা বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা। বিহার সরকারের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে তাদের ওই জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই বাচ্চাগুলো কে পুজোয় নতুন জামাকাপড় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে ভালোই আছে। তিনি আরো বলেন, বাচ্চাদের হোমে থাকার সাথে এদের পরিবারের ভোট না দিতে পারার কোনো যোগ নেই। তাদের পরিবারের লোকেরা চাইলেই বিহারে ফিরে যেতে পারে। বিহার সরকারের তরফে রিপোর্ট এলে আমরা এই বাচ্চাদের তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেবো।

Next Post

দীর্ঘদিনের দাবী পূরণ, সাজো সাজো রব সমগ্র ইটাহার জুড়ে

Wed Oct 28 , 2020
নিজস্ব সংবাদদাতা , ইটাহার , ২৮ অক্টোবর :   নব নির্মিত ইটাহার বাস টার্মিনাসের উদ্বোধনকে ঘিরে সাজো সাজো রব উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারে। দীর্ঘদিনের দাবী পূরণ হল ইটাহারবাসীর। এতোদিন পর্যন্ত কোন স্থায়ী বাস টার্মিনাস ছিলো না শহরে। বিধায়ক অমল আচার্য্যের তৎপরতায় বিশাল আকারের বাস টার্মিনাস তৈরী করা হয়েছে। আগামী ১ লা […]

আপনার পছন্দের সংবাদ