নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ৩১ জানুয়ারী : জীবনে কেটে গিয়েছে সত্তরটি বসন্ত, যৌবনের নিটোল গালে এখন বলিরেখার ছাপ স্পষ্ট, বার্ধক্য থাবা বসিয়েছে শরীরে-কিন্তু দুজনের দুটি মন আজো চিরসবুজ,আর সেই হৃদয়ের আবেগে সত্তর ছুঁই ছুঁই বয়সে ফের আরেকবার বিয়ের পিড়িতে বসে পড়লেন রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার দম্পতি রিলিফ কুমার রায় ও গৌরী রানী রায়। সৌজন্যে ছেলে,মেয়ে ও নাতি নাতনিদের আবদার।
বর্তমান সমাজে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি কালচারে যখন বৃদ্ধ বাবা-মা একাকিত্বে ভোগেন, যখন মাঝে মধ্যেই বাবা-মায়ের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের খবর উঠে আসে তখন এর ঠিক বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ নিলো রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার বাসিন্দা রিলিফ কুমার রায়ের ছেলে, মেয়ে ও নাতি,নাতনিরা। শনিবার বাড়িতেই বসেছিল বিয়ের আসর। লাল বেনারসী তে সজ্জিত গৌরী দেবীকে পাশে নিয়ে বিয়ে সারলেন রিলিফ বাবু। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ, সাতপাক ঘোরা,শুভদৃষ্টি বাদ ছিল না কোনোকিছুই। বিয়ের আসরের ব্যাকগ্রাউন্ডে সানাই এর সুরে আরো একবার বাঁধা পড়লো দুটি মন। বয়সের সংখ্যাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে উচ্চারিত হলো “ভালোবাসি,ভালোবাসি। ছেলে,নাতি-নাতনীদের এই উদ্যোগে কিছুটা লজ্জা পেলেও আনন্দ গোপন করেননি এই বৃদ্ধ দম্পতি। দুজনেই জানালেন,” ছেলে, মেয়েদের উদ্যোগেই আরো একবার বিয়ের পিড়িতে বসা। খুব ভালো লাগছে। ছেলে,মেয়েরা বাবা,মাকে যেন এভাবেই ভালোবাসে।” অন্যদিকে রিলিফ বাবুর নাতি-নাতনি রা বলেন,” দাদু-দিদার পঞ্চান্ন তম বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষেই এই আয়োজন। তারা যাতে ভালো থাকে,আনন্দে থাকে সেজন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। বৈদিক নিয়ম মেনেই বিয়ে দিয়েছেন পুরোহিত। পরিবারের সকলে মিলে খুব মজা করলাম। ” এই বিয়েতে পুরোহিত ছিলেন প্রতিবেশী শ্যামল চক্রবর্তী। তিনি বলেন,” জীবনে প্রথম এধরণের বিয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতা। ভালো লাগছে। সব নিয়ম মেনেই বিবাহ পর্ব শেষ হয়েছে। “