নিজস্ব সংবাদদাতা , মানিকচক , ১১ ফেব্রুয়ারি : শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। এই রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে গোটা পরিবার। দুধের ব্যবসা করে কোনমতে সংসার প্রতিপালন করছিলেন মানিকচক ব্লকের ভেসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু ঘোষ। কিন্তু হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপরই পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় কলকাতা এমনকি ভিন রাজ্যেও অসুস্থ পিন্টুকে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে জানা যায় ক্যান্সারে আক্রান্ত সে। তার পরিবারে রয়েছে বাবা-মা, দুই ভাই, স্ত্রী ও দুই সন্তান। পিন্টুর চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে তার পরিবার। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছে পিন্টু। এবিষয়ে পিন্টু ঘোষ জানিয়েছে, চিকিৎসা করতে গিয়ে সমস্ত সঞ্চয় আপাতত নিঃশেষিত। পাশাপাশি শারীরিক যন্ত্রণাতেও ভুগছি। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছি। যদিও এবিষয়ে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকি আগামী দিনেও সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত পিন্টু ঘোষ। এই রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে গোটা পরিবার। বাড়ির ঘটি-বাটি বিক্রি করে চিকিৎসায় সমস্ত শেষ করে দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। প্রতিদিন তিলে তিলে মৃত্যু পথযাত্রী যুবক পিন্টু ঘোষ। এবারে শেষ ভরসা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছে পিন্টু। উল্লেখ্য, মানিকচক ব্লকের ভেসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে দুধের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরিবারে স্ত্রী, দুই সন্তান ছাড়াও রয়েছে ভ্যান চালক বাবা ভুবন ঘোষ, মা ও দুটি ছোট ভাই। প্রায় দেড় বছর আগে শারীরিক অসুস্থতায় দেখা দেয় পিন্টুর। এরপরই পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় দফায় দফায় কলকাতা থেকে শুরু করে ব্যাঙ্গালোরে অসুস্থ পিন্টুকে নিয়ে যান। পরে জানতে পারেন ক্যান্সারে আক্রান্ত রয়েছে পিন্টু। বাড়ির সমস্ত গবাদি পশু জমি জায়গা সবকিছুই বিক্রি করে দেন অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য। ধীরে ধীরে যন্ত্রণায় কাতর পিন্টু মৃত্যুর মুখে ঢুলে পড়ছে। প্রয়োজন উচ্চ পর্যায়ে চিকিৎসা, কিন্তু সর্বস্বান্ত হওয়া পরিবার আর চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে মানিকচক ব্লক বিডিওর মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছেন পিন্টু। দিন কয়েক হলো স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে পেয়েছেন। সেটা দিয়েও চিকিৎসা যদি হয় সেই আশায় বুক বেঁধেছে পরিবার।
গ্রামের যুবক ছেলের এমন অর্ত কান্না দূর করতে আবেদন করেছেন প্রতিবেশীরা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থতা আজ গোটা পরিবার টাকে শেষ করে দিয়েছে। সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দিন কাটছিল পরিবারের কিন্তু বর্তমানে সব শেষ। পিন্টুর যাতে সু-চিকিৎসা পায় সেই দাবি তুলেছেন তারাও। আরে চিকিৎসা যদি না করানো সম্ভব হয় তাহলে কষ্ট যন্ত্রণা থেকে মৃত্যুই সমাধান ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি করেছে পিন্টু বলে জানান গ্রামবাসীরা। এপ্রসঙ্গে রোগে আক্রান্ত পিন্টু ঘোষ জানান, চিকিৎসা করতে গিয়ে সমস্ত সঞ্চয় আপাতত নিঃশেষিত। পাশাপাশি শারীরিক যন্ত্রণাতেও ভুগছি। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছি। বিষয়টি জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল। সার্বিকভাবে তার যা যা প্রয়োজন সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দেন তিনি। স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিশ্চয়ই তার পাশে দাঁড়াবেন। সমগ্র বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।