শিক্ষিকা থেকে ফুটপাতবাসী। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকার করুণ দশা

শিক্ষিকা থেকে ফুটপাতবাসী। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকার করুণ দশা

নিউজ ডেস্ক, ১০ সেপ্টেম্বর : “Don’t judge a book by It’s cover”, হ্যাঁ এই কথা হয়তো তাঁর জন্যে মানানসই। ঝরঝরে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা। আচরণে স্পষ্ট শিক্ষার ছাপ। কিন্তু তাঁর শীর্ণকায় চেহারা, পরনে অপরিচ্ছন্ন পোশাক, বাঁ হাতে মুষ্ঠিবদ্ধ ব্যাগ এসব বড্ড বেমানান তাঁর সাথে।

তিনি সারাদিন ঘুরে বেড়ান ডানলপ মোড়ে। ফুটপাথে রাত কাটান। এলাকায় এই বৃদ্ধাকে প্রায় সকলেই চেনেন। তিনি, ইরা বসু। স্থানীয়দের দাবি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা অর্থাৎ মীরা ভট্টাচার্যের বোন তিনি। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করতেন। কিন্তু বছরখানেক ধরে ডানলপ মোড়ই তার ঠিকানা। ফুটপাতেই কাটছে রাত। ২০০৯ সাল পর্যন্ত খড়দহের প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন। ৩৪ বছর সেই স্কুলেই শিক্ষকতা করতেন। অনেক স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হওয়ার সুয়োগ পেলেও খড়দহের স্কুল ছেড়ে যাননি। তারইমধ্যেই ভাইরোলজিতে ডক্টরেট করেছেন বলে দাবি বৃদ্ধার।গত ৫ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসে কয়েক জন প্রাক্তন ছাত্রী এসে তাঁকে সংবর্ধনা দিয়ে গিয়েছেন। ১৯৭৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন খড়দহের ওই স্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণকলি চন্দ বলেন, “শুনেছি, উনি অবিবাহিতা ছিলেন। ওঁনার সময়কার প্রধান শিক্ষিকার বাড়িতে এক সময়ে থাকতেন। এখন কেন রাস্তায় থাকেন, জানি না।’’ কৃষ্ণকলিদেবী জানান, আগের প্রধান শিক্ষিকার চেষ্টায় ইরাদেবী পিএফের টাকা পেলেও প্রয়োজনীয় কাগজ জমা করতে না পারায় পেনশন পান না। খড়দহের প্রাক্তন বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তও একবার স্কুলের এক অনুষ্ঠানে এসে তাঁর খোঁজ করেছিলেন বলে জানালেন স্কুলের আরোও এক শিক্ষিকা।কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তো তাঁর জামাইবাবু। তার পরেও তিনি ভবঘুরে! ডানলপ মোড়ের এটিএমের কোনায় নিজেকে সিঁটিয়ে রেখে বৃহস্পতিবার ৭২ বছরের বৃদ্ধা চেঁচিয়ে উঠলেন, “আমার জীবন, আমি যা খুশি করব।” এরপর বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন, “মানুষটা (বুদ্ধবাবু) আজ অসুস্থ। মীরাদেবীও অসুস্থ। ওঁদের করোনা হয়েছিল। কেন ওঁদের নিয়ে টানাটানি করছেন?’’ বৃহস্পতিবার সকালে পথচলতিরাও বৃদ্ধার কথা শুনে থমকেছেন। প্রশ্ন করেছেন, “উনি বুদ্ধবাবুর শ্যালিকা?”ক্রমশ খবরটা পৌঁছয় খড়দহ পুরসভার কাছে। সেখান থেকে বরাহনগর থানায়। সিপিএম নেতারাও যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। বিকেলে ইরাদেবীকে লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সব কিছুর পরেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকা এভাবে রাস্তায় কেন, সেটা রহস্যই থেকেই গেল।

Next Post

রায়গঞ্জে বিজেপির তীব্র গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। সাংসদের বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক।

Fri Sep 10 , 2021
রায়গঞ্জ, ১০ সেপ্টেম্বর : রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু রায়গঞ্জের মানুষের আশীর্বাদ আর ভালোবাসায় আমি রায়গঞ্জ থেকে বিজেপির বিধায়ক হয়েছি।এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব হারিয়ে তিনি এখন মানসিক অবসাদে ভুগছেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী “। শুক্রবার এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রায়গঞ্জেরবিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। এদিন […]

আপনার পছন্দের সংবাদ