নিজস্ব সংবাদদাতা , রতুয়া , ৩০ মে : শোওয়ার ঘর থেকে দেওর ও বৌদির রহস্যজনকভাবে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রবিবার দুপুরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ালো রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের দেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাকাইয়া গ্রামে।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম শিব শংকর ঘোষ। এবং নিহত ওই গৃহবধুর নাম মিনু ঘোষ। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে মিনুর সাথে বিয়ে হয় মাকাইয়া গ্রামের যুবক পেশায় দিনমজুর শুভঙ্কর ঘোষের। তাদের দুই বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। রবিবার দুপুরে শোওয়ার ঘর থেকে দেওর ও বৌদির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এরপর বিষয়টি বাড়ির লোকেদের নজরে আসলে তারা চিৎকার শুরু করে দেন। বাড়ির লোকেদের চিৎকারে ছুটে আসে প্রতিবেশীরাও। পরবর্তীতে রতুয়া থানার পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই গৃহবধূকে ব্লেড এর কোপ মেরে খুন করে দেওর শিব শংকর এরপর সে নিজেও সেই ঘরেই আত্মঘাতী হয়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করার পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত ব্লেডটিও উদ্ধার করেছে। যদিও এটি খুন নাকি নিতান্তই আত্মহত্যা সেবিষয়ে ঘটনার প্রকৃত তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিশ। খুনের কারণ জানতে আপাতত শুভঙ্করকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ আধিকারিকরা৷ মিনুর এক তুতো দাদা মুকেশ ঘোষ বলেন, “ফোনেই শুনলাম, মিনুকে নাকি ওর দেওর খুন করেছে৷ খবরটা পেয়ে মাকাইয়া গ্রামের এক আত্মীয়কে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হই৷ পরে শুভঙ্করও ফোনে গোটা ঘটনা জানায়৷ খবর পেয়ে আমরা প্রথমে মাকাইয়া গ্রামে যাই৷ ওখানে কেউ কিছু বলছে না৷ তাই এখন থানায় এসেছি৷ আমাদের ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে শুভঙ্কর, তার বাবা-মা এবং তার ছোট ভাইও জড়িত৷ এমনও হতে পারে, মিনুকে খুন করার পর সবার নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে ওরাই শিবশংকরকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে৷” মিনুর মামি রিনা ঘোষ বলেন, “সব কিছু দিয়েই মেয়েটার বিয়ে দিয়েছিলাম৷
বিয়ের পর শ্বশুর-শাশুড়ি শুভঙ্কর ও মিনুকে আলাদা করে দেয়৷ তার জন্য আমার ননদ মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসে৷ এক বছর বাবার বাড়িতেই ছিল মিনু৷ পরে শুভঙ্কর বাড়ির লোকজনকে নিয়ে গিয়ে মিনুকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়৷ সেই সময় থানাতেই বিচার হয়েছিল৷ আজ শুনলাম, দেওর আমার ভাগ্নিকে খুন করেছে৷ দেওরের সঙ্গে ওর কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ এখন মিনুদের পারিবারিক ঝামেলাও ছিল না৷ তবে শুভঙ্কর খুব মদ খায়৷ মদ খেয়ে মাঝেমধ্যেই ও স্ত্রীকে মারধর করত৷ এই ঘটনার সঙ্গে সে জড়িয়ে রয়েছে কিনা তা অবশ্য বলতে পারব না৷” মিনুর মা রেখা ঘোষ অভিযোগ করে বলেন “জামাই আমার মেয়েকে দেখতে পারত না। বিয়ের পর থেকেই অশান্তি করত মেয়ের সঙ্গে। এই সব ঝামেলার জন্য মেয়েকে এক বছর বাড়িতে রেখে ছিলাম। শুভঙ্কর নেশা করে হামেশাই আমার মেয়েকে মারধর করতো। ওদের ঝামেলার কারণে আমার দু’বছরের নাতনিকে নিজের বাড়িতেই রাখতাম। রবিবার দুপুরে আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে বলেছে আমাকে গলা কেটে মেরে ফেলে দেবে এরা। মেয়ের দেওর শিব শংকর কিভাবে মারা গেছে তা আমার জানা নেই। আমি চাই আমার মেয়ের দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।” পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করার পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত ব্লেডটিও উদ্ধার করেছে। যদিও এটি খুন নাকি নিতান্তই আত্মহত্যা সেবিষয়ে ঘটনার প্রকৃত তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিশ।