মহাকুম্ভে শাহী স্নানে নিরাপত্তা

১৩ জানুয়ারী থেকে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা ( mahakumbh )। মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। দেশ-বিদেশের বহু প্রান্ত থেকে কোটি কোটি পূণ্যার্থীরা পুণ্যলাভের আসায় আসেন মেলা প্রাঙ্গনে। প্রতি বছর মহাকুম্ভে এক অভূতপূর্ব আয়োজন করে উত্তর প্রদেশ প্রশাসন ( Uttar Pradesh Administration । নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকেও বেশ নজরদারি রাখা হয়। এবারেও তার অন্যথা হয়নি। বরং অন্য বারের তুলনায় এবারের কুম্ভে অনেক আগে থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসে পরিদর্শন করে গিয়েছেন মেলা প্রাঙ্গন। গঙ্গা, যমুনা, স্বরস্বতী -এই তিন নদীর সঙ্গমস্থলে তৈরী ত্রিবেণী সঙ্গম। মঙ্গলবার রাতে ছিল মৌনী অমাবস্যা। মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে ত্রিবেনীতে ( tribeni ) শাহী স্নান করা অত্যন্ত সৌভাগ্যজনক বলে মনে করা হয়। তাই পূণ্যার্থীদের ভিড় যে উপচে পড়বে তা অবশ্য আগেই মনে করা গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রচুর মানুষের ভিড় হয় মেলা প্রাঙ্গনে। সময় যত এগোচ্ছে ততই ভিড় আরও বাড়তে থাকে। এদিকে পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে উত্তর প্রদেশ প্রশাসন ত্রিবেণী সঙ্গমের এক কিলোমিটার দূরে ব্যারিকেড মোতায়েন ছিল। একেবারে আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা করা হয় মেলা প্রাঙ্গনে। তবুও আটকানো গেল না দুর্ঘটনা।
মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা

পূর্ণাথীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এবং মেলাপ্রাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগের থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছিল উত্তর প্রদেশ সরকার। সকাল থেকেই বহু মানুষের ভিড় করেন কুম্ভে। সময় যত এগোচ্ছে ভিড় আরও বাড়তে শুরু করে মেলাপ্রাঙ্গনে। রাত ১০ টা পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু, রাত ১০ টার পর থেকে চিত্রটা বদলাতে শুরু করলো। রাত ১২ টার পর তো পুরো পরিস্থিতি টাই বদলে যায়। ১০ টার পর থেকে পূণ্যার্থীরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যান ত্রিবেণী সঙ্গমের দিকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল যে, পূণ্যার্থীরা আসুক, স্নান করুক, পরে আবার ফিরে যাক। কিন্তু, স্নানের পর বহু মানুষ ফেরার তো দূরের কথা সঙ্গমস্থলের আশেপাশে জমায়েত করেছিলেন। অনেকে তো আবার প্লাস্টিক পেতে শুয়ে ছিলেন ব্যারিকেডের পাশে। রাত ১২ টার পর ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যায়। রাত ২ টার পর কেউ কেউ ব্যারিকেড টপকে এমনকি ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তা রক্ষীদের। অনেকেই ব্যারিকেড ভেঙে ঘুমন্ত মানুষদের উপর হুড়মুড়িয়ে পরে যান। আর তখনই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উত্তর প্রদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫। আহত একাধিক। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আহতদের উদ্ধার কাজ শুরু হয়। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রেডক্রস, পুলিশ, রাফ ও nsg – র দল পৌঁছেছে। এদিকে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে আহতদের চিকিৎসার জন্য মেলা প্রাঙ্গনে যে হাসপাতাল রয়েছে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। পদপিষ্টের ঘটনার পর শাহী স্নান আপাতত বন্ধ রেখেছে সাধুদের আখড়াগুলি।
বর্তমান পরিস্থিতি মেলা প্রাঙ্গনে